লকডাউনে চট্টগ্রাম নগরজুড়ে রিকশা আর রিকশা

লকডাউনে নগরজুড়ে দেখা যায় শুধু রিকশা আর রিকশা অন্যকিছু তেমন একটা দেখাযাচ্ছেনা।

করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার কারণে চট্টগ্রামে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পথে পথে ভোগান্তিতে পড়েছে অফিসগামী সাধারণ যাত্রীরা। সোমবার নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে রিকশার আধিপত্যের পাশাপাশি যাত্রীদের ভোগান্তিও দেখা গেছে লক্ষণীয়।

আগামী বৃহস্পতিবারের আগেই সীমিত পরিসরে লকডাউন চলাকালে রাস্তায় দেখা গেছে কিছু কিছু প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলও। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে কঠোর হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

ইতিমধ্যে ১২টি টিম এবং প্রতিটি উপজেলায় তিনটি করে টিমকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করলেই কঠোর শাস্তি দেয়া হবে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

মনছুর ও তাহের আফজাল কাদের নামের কয়েকজন রিকশায় থাকা যাত্রী বলেন, লকডাউনে নগরীতে রিকশা আর রিকশা। গণপরিবহন না থাকায় রিকশা ভাড়া এতটা বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ। নিরুপায় হয়ে তাতেই চড়তে হচ্ছে কি আর করার চাকরি বাঁচাতে হলে যে করে হোক গন্তব্য স্থানে পৌঁছাতে হবে। এত বেশি ভাড়া দিয়ে যাদের রিকশায় চড়ার সামর্থ্য নেই, তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কুল-কিনারা পাচ্ছেন না।

তারা আরো বলেন, স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানোর কথা বললেও দুর্ভোগ শতগুণে বেড়েছে কমার উপায় নেই। হাজার হাজার মানুষের এই দুর্ভোগ দেখার কি কেউ আছে এই খেটে খাওয়া দিনমজুর নিরিহ সাধারণ মানুষের পাশে কেউ নেই?

বেসরকারি ব্যাংকের মিনহাজ বলেন, লকডাউন ঘোষণা দেওয়ায় মানুষ অনেক কষ্টের মধ্যে পড়েছে।

গণপরিবহন বন্ধ কিন্তু অফিস খোলা। মানুষ কিভাবে যাতায়াত করবে? আবার বলা হচ্ছে, যাদের অফিস খোলা থাকবে তারা অফিসের নিজস্ব পরিবহন ব্যবহার করবেন। যেসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন নেই, তারা কিভাবে যাবে সে চিন্তা কে করবে কেউ করে না। দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে রিকশায় যেতে হচ্ছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, কঠোর লকডাউনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় জেলা প্রশাসনের ১২টি টিম কাজ করবে।

এছাড়া প্রত্যেক উপজেলায় ৩টি করে টিম কাজ করবে।

তিনি বলেন, এটি সকলের জন্য সতর্ক সংকেত। তাই সরকার এবারের ঘোষিত লকডাউন সফল করতে কঠোর অবস্থানে থাকবে। করোনার ভারতীয় ধরন অত্যন্ত মারাত্মকভাবে ছড়াচ্ছে। পরিস্থিতি যদি আরও অবনতি হয়, তাহলে সামাল দেওয়া কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়বে। তাই সকলে মাস্ক পরিধান করুন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। তবে জনসচেতনতা তৈরিতে মাইকিং করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সোমবার থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে রিকশা ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ। খোলা রয়েছে সরকারি-বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান। এতে অফিসগামী চাকরিজীবীরা পড়েছেন বিপাকে। কেউ হেঁটে আবার কাউকে প্রচলিত রিকশা ভাড়ার তিনগুণ দিয়ে পৌঁছতে হচ্ছে গন্তব্যো স্থানে। নিষেধাজ্ঞার প্রথমদিনে সাধারণের তুলনায় প্রায় কয়েকগুণ চাহিদা বেড়েছে রিকশাওয়ালাদের।

বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, জিইসি, চকবাজার, অক্সিজেন, নিউ মার্কেট, আগ্রাবাদ, ২ নম্বর গেট, লালখান বাজার, দেওয়ানহাট, একে খান মোড় ও কর্ণফুলী ব্রিজসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষারত মানুষের ভিড় দেখা যায়। এদের মধ্যে বেশিরভাগই অফিসগামী মানুষ। রিকশাচালকদের দাপটে

সাধারণ মানুষ অনেকটা অসহায় সবাই। গন্তব্য একই স্থানে হওয়ায় অনেককে ভাড়া ভাগাভাগি করেও রিকশায় উঠতে দেখা গেছে। কেউ কেউ পণ্য পরিবহনের ভ্যান ও মালবাহী পিকআপে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন অফিসে যাওয়ার জন্য। আবার অনেকে প্রাইভেটকার দেখলেই চেষ্টা করেছেন রাইড নেওয়ার জন্য কতদিন এভাবে চলতে হবে বোঝার উপায় নাই।