লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান
আজ পবিত্র হজ। আরাফাতের ময়দানে থাকার দিন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ২৫ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান পাপমুক্তি ও আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনা নিয়ে সেলাইবিহীন সাদা কাপড়ে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আজ থাকবেন সেখানে।
আকুল হৃদয়ে মহান রাব্বুল আলামিনকে বলবেন, ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক।’ আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির। তোমার কোনো শরিক নেই; সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।
মিনায় অবস্থান নেয়ার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে শুরু হয়েছে পবিত্র হজ পালনের আনুষ্ঠানিকতা। শুক্রবার সারা দিন ও রাত তারা মিনায় কাটান ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মশগুল ছিলেন জিকির ও তালবিয়াতে।
হজ মুসলিম বিশ্বের বৃহত্তম সম্মেলন। সৌদি আরবের হজ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হাতিম বিন হাসান কাদি সৌদি গেজেট ও এএফপিকে জানান, এ বছর প্রায় ২৫ লাখ মুসল্লি হজব্রত পালন করবেন। এর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন ১৮ লাখ ব্যক্তি। বাংলাদেশি রয়েছেন ১ লাখ ২৬ হাজার।
হজের ফজিলত : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, হজ মানুষকে নিষ্পাপ করে, যেভাবে লোহার ওপর থেকে মরিচা দূর করা হয়। (তিরমিজি)।
অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রকৃত হজের পুরস্কার বেহেশত ব্যতীত অন্য কিছুই হতে পারে না। সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে যারা হজ পালন করবেন, আল্লাহ তাআলা তাদের হজ কবুল করবেন এবং তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত রহমত ও বরকত।
নবী করিম (সা.) আরো বলেন, যে ব্যক্তি যথাযথভাবে হজ পালন করে, সে পূর্বের পাপ থেকে এরূপ নিষ্পাপ হয়ে যায়, যেরূপ সে মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন নিষ্পাপ ছিল। (বুখারি)।
হজের তিন ফরজ: হজের ফরজ তিনটি—যথা (১) ইহরামের নিয়ত বা ইচ্ছা করা, (২) ৯ জিলহজ জোহর থেকে ১০ জিলহজ ফজরের পূর্ব পর্যন্ত যেকোনো সময় আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা এবং (৩) তাওয়াফে জিয়ারত করা, ১০ জিলহজ ভোর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো সময় কাবাঘর তাওয়াফ বা সাতবার প্রদক্ষিণ করা।
কাবায় পরানো হবে নতুন গিলাফ: সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, প্রতিবছরের মতো আরাফাতের দিনে (৯ জিলহজ) আজ পবিত্র কাবা আচ্ছাদিত হবে নতুন গিলাফে। পবিত্র মসজিদের (মসজিদুল হারাম) ও মসজিদে নববীর সভাপতি শেখ ড. আবদুল রহমান বিন আবদুল আজিজ আল-সুদাইসের তত্ত্বাবধানে আজ ফজরের নামাজের পর নতুন এ গিলাফ পরানো হবে।
এবারের গিলাফটি তৈরি করা হয়েছে সিল্কের ৬৭০ কেজি সুতা, স্বর্ণের ১২০ কেজি সুতা এবং রুপার ১০০ কেজি সুতা দিয়ে। কালো জমিনের ওপর অঙ্কিত হয়েছে সোনালি আরবি হরফে কোরআনের আয়াত। বাদশাহ আবদুল আজিজ কমপ্লেক্সে ১৬০ শিল্পী ও কারিগর এ গিলাফটি তৈরি করেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন