লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে একই ঘরে গরু মানুষের বসবাস

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে চরম দরিদ্রতার কষাঘাতে জরাজীর্ণ ঘরে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে গরুর সাথে বসবাস করছেন ভূমিহীন শাহ আলম। নিজের থাকার ঘরের একদিকে বিছানা অন্যদিকে খড় বিছানো গরুর থাকার জায়গা। অন্যদিকে তার বাবা বদিউজ্জামাল ও ছোট ভাই মাহাবুরও থাকেন খাস জমিতে। কাজ জুটলে মুখে খাবার ওঠে, না হলে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটে। এভাবেই শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা পার করছেন তারা । তবুও দেখার যেন কেউ নেই।

মঙ্গলবার (২ মে) সরেজমিন গিয়ে এমন দুর্বিষহ জীবনের চিত্র চোখে পড়ে উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের মহিষামুড়ি এলাকায় ভূমিহীন শাহ আলমের বাড়িতে।

ভূমিহীন শাহ আলম বলেন, খাস জমিতে কোন রকম দো-চালা একনা টিনের ঘর করে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে থাকি। পাশে গরুটা থাকে। ওই ঘরেই থাকা খাওয়া সব। কিন্তু দুর্গন্ধে থাকা যায় না। এই অবস্থায় বাড়িঘরে কোন আত্মীয়স্বজন আসতে পারেনা। সহায় সম্বল কিছুই নেই। শুধু একটা গরু আছে। সরকার একটা ঘর দিলে বাকী জীবনটা সুখে থাকতে পারতাম।

কান্না জড়িত কন্ঠে শাহ আলমের স্ত্রী মনিরা বেগম বলেন, অভাবের তারনায় গরু নিয়ে একই ঘরে থাকতে হয় । খাওয়া দাওয়াও করতে হয় একই ঘরে। আমার স্বামী দিনমজুরির কাজ করে যা আনে তাই খাই, না আনলে না খাই। অনেকে সরকারি ঘর পাইলেও আমাদের ভাগ্যে জুটেনি সরকারি বরাদ্দের ঘর।

প্রতিবেশি মোহাম্মদ আলী বলেন, প্রায় বিশ বছর ধরে এমন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন শাহ আলমসহ তার পুরো পরিবার। তার বাবা বদিউজ্জামাল একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী অনেক কষ্টে দিন পার করছে। বৃষ্টি আসলে কষ্ট তাদের আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। রান্না ঘরের যে অবস্থা তাতে চুলা ভিজে যায়। রান্না করতে পারে না।

কাকিনা ইউনিয়নের (৯ নং ওয়ার্ডের) ইউপি সদস্য রমজান আলী বলেন, বদিউজ্জামানসহ তার দুই ছেলে ভূমিহীন। থাকেন খাস জমিতে। সরকারি বিধি মোতাবেক তারা সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য।

এ বিষয়ে কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান তাহির তাহু বলেন, তারা খাস জমিতে থাকে কিনা আমার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে দেখতে হবে।’