লালমনিরহাটের মহিপুর তিস্তাপাড়ে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

ঈদুল ফিতরের নামাজের পরপরই চিত্তবিনোদন পিপাসু মানুষের মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠেছে মহিপুর তিস্তার পাড়। গতবারের চেয়েও এবার দর্শনার্থীদের পদচারণায় যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। লালমনিরহাট ও রংপুর জেলার মানুষের মেলবন্ধনে মহিপুর-কাকিনা পয়েন্টে নবনির্মিত ‘শেখ হাসিনা তিস্তা সড়ক সেতুর’ টানেই হাজার হাজার মানুষের ভিড় সেখানে।

সূর্যের লুকোচুরি, বিশাল ধু-ধু বালুচরে সবুজ মাঠ, আর তিস্তার বুকে সমুদ্র সৈকতের খেলা দেখতে এখানে ছুটে এসেছে বিভিন্ন এলাকার মানুষজন। বন্ধুদের নিয়ে নৌকায় ভাসতে ভাসতে কেউ কেউ ঘুরে দেখছে নদীর কুল-কিনারা। কেউ ব্যস্ত মোবাইল ফোনে সেলফি নিতে। সেতুর উপর-নিচ শুধুই মানুষ আর মানুষ। কর্মময় জীবনের ব্যস্ততায় হাঁপিয়ে উঠা মানুষগুলোর বেশির ভাগই এখানে খুঁজে ফেলে আসা সোনালি দিনের স্মৃতি।

রংপুর বিভাগের বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সমাগমে মুখরিত তিস্তার পাড়ে এখন বইছে আনন্দের জোয়ার। তবে ঈদের ছুটিতে থাকা সব বয়সী মানুষের ভিড় জমলেও এখানে আসা সিংহভাগই তরুণ-তরুণী। শিশুদের সঙ্গে অভিভাবকরাও কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে যাচ্ছে আনন্দের রাজ্যে।

এখানে ঘুরতে আসা শারমিন ও সুমির সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, ঈদের আনন্দ কেউ মিস করতে চায় না। তিস্তার পাড়ে বিচিত্র আনন্দ উপভোগ করা সম্ভব। যা অন্য কোনো নদীর পাড়ে হয়তো সম্ভব নয়। তাই এখানে এসেছেন ঘুরতে।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভাণ্ডার থেকে রুবেল মিয়া এসেছেন । তিনি জানান, শেখ হাসিনা তিস্তা সড়ক সেতুর সংযোগ সড়কের দু’পাশের বিশাল দীঘির চারদিকে রয়েছে নানা প্রজাতির গাছগাছালির সমাহার। পানি আর সবুজ মিলে সে এক অপরূপ দৃশ্য। মনে হয় যেন এ এক সমুদ্র সৈকত।

রংপুর থেকে আসা সাব্বির ও লাবিব বলেন, ‘নদীর বুকে ভাসমান বিলুপ্ত আশির দশকের বেশ কিছু পাল তোলা নৌকাগুলো দেখতে বেশ ভালো লাগে। এগুলো আমাদের মতো অন্যদেরও নজর কাড়ছে। আমরা ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনে বেশ কিছু প্রিয় মুহূর্ত বন্দী করেছি।’

এরকম হাজার হাজার মানুষ ঈদ আনন্দে কিছুটা সময় এখানে ঘুরতে মোটরসাইকেল, মিনিবাস, কার, মাইক্রোবাস, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে তিস্তার পাড়ে আসছে।

স্থানীয়রা মনে করছে, পর্যটক ও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বাড়াতে সরকারি সহায়তায় মহিপুর তিস্তার পাড়কে নতুন মাত্রায় সাজানো হলে এখান থেকে বিপুল পরিমাণ সরকারের কোষাগারে রাজস্ব আসবে। এতে করে দিন বদলের এই যুগে বদলে যাবে নদী ভাঙন কবলিত মহিপুরের মানুষের জীবনযাত্রার মানও।’