শাহরাস্তিতে মায়ের কোলে ১৮ বছর পরে ফিরে যাচ্ছে সবুজ
চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার সুচিপড়া গ্রামের খলিল মেম্বার বাড়ির বাসু মিয়ার ছেলে সবুজ (২২) আঠার (১৮) বছর পর আপন ঠিকানায় মায়ের কোলে ফিরে যাচ্ছে। সবুজ বর্তমানে সিরাজগঞ্জ খাজা ইউনুস আলী ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়নরত।
এদিকে সুচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের কাজী ভগ্নিপতি মাওলানা মোস্তফা কামাল এবং তার ছেলে হাসান মাহমুদ সবুজদের বাড়িতে গিয়ে নিশ্চিত করেছেন এই সবুজ ২০০৪ সালে হারিয়ে যাওয়া সবুজ।
সবুজের পিতা: বাসু মিয়া, মাতা: খোদেজা বেগম, পাঁচ ভাই-বোন, বড় বোন শিউলি, তার পর সবুজ, ছোট বোন সাথী এবং ছোট ভাই শাকিব ও সাকিল এবং দাদা লাল মিয়া।
২০০৪ সালে সবুজ, দাদা লাল মিয়ার সাথে রাজধানী ঢাকাতে খালুর বাসায় বেড়াতে যান। খালুর বাসায় কয়েকদিন বেড়ানোর পর বাড়িতে আবার রওয়ানা করে দাদা লাল মিয়ার সাথে, বাড়ি ফেরার সময় তার খালা সবুজকে কিছু টাকা দিয়েছে খেলনা কেনার জন্য। প্রতিমধ্যে বাড়ি ফেরার পথে খেলনার দোকান দেখে সবুজ বেঁকে বসলো খেলনা ফুটবল কিনে দিতে, দাদা লাল মিয়া বললো- তোমাকে বাড়ি গিয়ে খেলনা কিনে দিবো, কিন্ত সবুজ একগুঁয়ে নাছোড়বান্দা খেলনা ছাড়া যাবেনা, এতে দাদা লাল মিয়া বললো- তুই থাক আমি যাচ্ছি, এই বলে লাল মিয়া একটু সামনে গেলো আর ভিড়ের মধ্যে পড়ে গেলো। এতেই নানা নাতির বিচ্ছেদ হয়ে গেলো।
অতঃপর সবুজ বসে বসে কাঁদতে লাগলো তখন এক মুদি দোকানদার সবুজকে বাসায় নিয়ে গেলো এবং পর দিন ডেমরা থানায় সাধারণ ডায়রি করে করে তাকে পুলিশের কাছে দিয়ে আসে। পরে থানা পুলিশ অপরাজয় বাংলাদেশ নামে একটি এনজিওর কাছে সবুজকে হস্তান্তর করে। অপরাজয় কয়েক মাস তাদের কাছে রেখে সবুজের পরিবারের সন্ধান না পেয়ে আরেক বেসরকারি এনজিও ফেমিলিজ ফর চিল্ড্রেন এর নিকট হস্তান্তর করেন ২০০৫ সালে।
ফেমিলিজ ফর চিল্ড্রেন এর পরিচালক শিখা বিশ্বাস জানান, সবুজ অনেক মেধাবী ছাত্র তাই ফেমিলিজ ফর চিল্ড্রেন স্থানীয় স্পন্সর সহযোগিতায় সবুজকে লেখাপড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। সবুজ বর্তমানে সিরাজগঞ্জ খাজা আলী ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়নরত।
গত ২০শে এপ্রিল মঙ্গলবার ব্রেন্ডিং বাংলাদেশ আর,জে কিবরিয়ার আপন ঠিকানায় সবুজকে নিয়ে আসেন ফেমিলিজ ফর চিলড্রেন এর পরিচালক শিখা বিশ্বাস। ভিডিওটি প্রচারের এক ঘন্টার মধ্যে কেশরাঙা গ্রামের রাশেদ আলম সবুজের মামা নিশ্চিত করেন সবুজ তার ভাগীনা এবং ২০০৪ সালে ঢাকাতে তার দাদা লাল মিয়ার সাথে বেড়াতে গিয়ে হারিয়ে যাই এই সবুজই তার ভাগিনা সবুজের খালুর মুদি দোকান এখনো আছে ঢাকাতে।
এদিকে ব্রেন্ডিং বাংলাদেশ আপন ঠিকানার পরিচালক আর,জে কিবরিয়া ভাই বলেছেন, লক ডাউন শেষ হওয়া মাত্রই আমরা সবুজকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিবো ইনশাল্লা
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন