শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ৭৭ গ্রাম প্লাবিত
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ, দশানী ও মৃগী নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত শেরপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে বন্যার পানি গত ২৪ ঘণ্টার আরও ১৩ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
বন্যায় জেলার তিন উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ৭৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তন্মধ্যে- শেরপুর সদরের ৮ ইউনিয়নের ৩০টি, শ্রীবরদীর ২ ইউনিয়নের ৩৫টি এবং নকলার ৪ ইউনিয়নের ১২ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৪০ হাজার লোক পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
সদর উপজেলার চরপক্ষিমারি ইউনিয়নের কুলুরচর-বেপারীপাড়া গ্রামের বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। ওই গ্রামের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ঘরবাড়ি হারা অন্তত ৩০০ পরিবার স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাঁধের উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. জাফর মিয়া জানান, ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে থাকা লোকজনের জন্য কুলুরচর-বেপারিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হলেও কোনো ধরনের সহায়তা কিংবা কিংবা ত্রাণ তৎপরতা নেই। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু গত ৫ দিন অতিবাহিত হলেও কেউ কোনো সাহায্য করছেন না। পানিবন্দি লোকজন সরকারি কোন ত্রাণ না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তবে স্থানীয় মশগুল মিয়া নামে এক ব্যবসায়ীর দেয়া পরিবার প্রতি এক কেজি করে চিড়া আশ্রয় কেন্দ্রে বিতরন করা হয়েছে।
বলাইরচর ইউনিয়নে ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার সারোয়ার জাহান নাসির বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে দশানি নদীর ভাঙনে প্রায় ২০০ ফুট বাঁধ ভেঙে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি-ফসলের খেত বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে এলাকার সবজি ও আমন চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। লাখ লাখ টাকার সবজির আবাদ বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।
এদিকে হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি সদরের কামারের চর ও চরপক্ষিমারি ইউনিয়ন এবং শেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী ফজলুল হক চাঁন ভেলুয়া ও কেকের চর ইউনিয়নের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বন্যার্তদের মাঝে কিছু ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন।
শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, বন্যা দুর্গত এলাকার জন্য ৭ মেট্রিক টন খয়রাতি চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আশা করা যায় আগামীকালের মধ্যে বন্যার্তদের নিকট সেসব চাল পৌঁছে যাবে।
নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব সরকার বলেন, বন্যার পানিতে ৪ ইউনিয়নের ২০০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা নাসরিন জানান, ভেলুয়া ইউনিয়নের সবগুলো গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়া কেকের চর ইউনিয়নও বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যার্তদের মাঝে খয়রাতি চাল বিতরণ করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন