শ্রীলঙ্কা পরীক্ষায় ফেলই মারল বাংলাদেশের সিনিয়ররা!

হঠাৎই স্বস্তির হাওয়া বইতে শুরু করেছিল বাংলাদেশের ফুটবলে। এশিয়ান গেমস ফুটবলে ইতিহাস গড়ে দ্বিতীয় পর্বে খেলে সেই সুদিন ফিরিয়ে এনেছিলেন বাংলাদেশের ফুটবলাররাই। ৪ সেপ্টেম্বর ঘরের মাঠে বসতে যাওয়া সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপকে ঘিরে তাই স্বপ্নচারীও হতে শুরু করেছিলেন দর্শকরা।

কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ শুরুর আগে একটা আন্তর্জাতিক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ পেল বাংলাদেশ। নীলফামারীতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে ম্যাচটি বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে নিয়েছিলেন পরীক্ষার মঞ্চ হিসেবে। বিশেষ করে এশিয়াডে দলের বাইরে থাকা সিনিয়র ফুটবলারদের জন্য এই ম্যাচ ছিল পরীক্ষার মঞ্চ। যে পরীক্ষায় পাশ করে সাফের দলে সুযোগ পেতে হতো তাদের। কিন্তু সিনিয়রদের এই পরীক্ষার মঞ্চে ফেল করে বসল পুরো বাংলাদেশ দলই। উত্তরের দর্শকদের সব উৎসব মাটি করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১-০ গোলে হেলে গেছে বাংলাদেশ।

শুধু নীলফামারী নয়, পুরো রংপুর বিভাগেই এটি ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ। বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে শুরু হওয়া ম্যাচটি উপভোগ করতে অনেক আগেই কানায় কানায় ভরে উঠে স্টেডিয়াম। ২১ হাজার ধারনক্ষমতার স্টেডিয়ামে দর্শকর ছিল আসলে ধারনক্ষমতার অনেক বেশি। অনেক দর্শক মুখ ভারী করে ফিরেছেন মাঠে ঠুকতে না পেরে।

ম্যাচের শুরু থেকেই দর্শকরা আকুন্ঠ সমর্থন দিয়ে গেলেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবলই দেখা মিলল বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে। কিন্তু আক্রমণভাগে বাংলাদেশকে সেই পুরোনো রোগটা যেন পেয়ে বসল। জেমি ডের শিষ্যদের মধ্যে থাকল সমন্বয়হীনতার ছাপ। বিপরীতে ম্যাচের ১০ মিনিটে বাংলাদেশের ভুল পাস থেকে বল পেয়ে গোল করে বসলেন শ্রীলঙ্কার মোহাম্মদ ফজল। প্রায় মাঝ মাঠের কাছ থেকে সরাসরি শটে গোলরক্ষক শহিদুল আলম সুহেলকে পরাস্থ করেন তিনি। মুগ্ধকর যে গোলে নয়ন জুড়ালো আসলে সবারই।

কিন্তু হোক না সাফের আগে প্রস্তুতির আবহ, এই ম্যাচে জয় পাওয়াটাও যে কম গুরুত্বপূর্ন নয় বাংলাদেশের জন্য। গোল হজমের পর থেকেই সেটি পরিশোধে মরিয়া দেখা গেল মামুনুল বাহিনীকে। কিন্তু আক্রমণভাগ বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে ফিনিংশে। কখনো পাকির আলির লঙ্কান ডিফেন্সে খেই হারিয়েছে বাংলাদেশের আক্রমণ। কখনো বা আবার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছেন শ্রীলঙ্কার গোলরক্ষক সুজন পেরেরা।

শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার মানষিকতা অবশ্য ছিল জেমি ডের শিষ্যদের। কিন্তু পরীক্ষায় ফল এনে দিতে না পেরে নাবীব নেওয়াজ জীবন, শাখাওয়াত হোসেন রনি, ওয়ালী ফয়সাল, মামুনুলদের কারো জন্য সাফের চূড়ান্ত দলে টিকে যাওয়া কি হুমকিতেই পড়ে গেল এম্যাচে? এ ম্যাচে পরীক্ষা দিয়েই যে দলে সুযোগ পাওয়ার দাবি জোড়ালো করতে হতো তাদের।

এশিয়াডের সেরা একাদশকে বিশ্রাম দিয়েই এম্যাচের দল সাজিয়েছিলেন জেমি ডে। তারপরও টুটুল হোসেন বাদশা, এমনকি এশিয়াডের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকেও বদলি হিসেবে খেলালেন বাংলাদেশ কোচ। কিন্তু খেলার রং বদলালো না। ফলে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো বাংলাদেশকে। সাফের আগে এই হারে কি বড় ধাক্কাও খেল না বাংলাদেশ দল? সাফের চূড়ান্ত দল গঠনের সঙ্গে যে ধাক্কা সামলাতেও এখন কাজ করতে হবে জেমি ডেকে।