সংখ্যালঘুদের জন্য ৩০টি সংরক্ষিত আসন চান এরশাদ
জাতীয় সংসদে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য ৩০টি সংরক্ষিত আসন রাখার দাবি জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
তিনি বলেন. বর্তমান সংসদে নারীদের জন্য ৫০টি সংরক্ষিত আসন আছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের জন্য ৩০টি আসন সংরক্ষিত রাখতে জাতীয় পার্টি সংসদে প্রস্তাবনা দেবে। আশা করছি তা সংসদে সর্ব সম্মতিক্রমে পাশ হয়ে আগামী সংসদ থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩০ জন সংরক্ষিত আসনের এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে।
রোববার শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে গুলশানের ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় পার্টির উদ্যোগে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এরশাদ এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় এতে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রম্নহুল আমিন হাওলাদার, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেন দিপু, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সদস্য সচিব নকুল চন্দ্র সাহা, শ্রীকৃষ্ণসেবা সংঘের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যক্ষ সমরেন্দ্র নাথ রায় (সমর), জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ প্রমানিক, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সহদেব চন্দ্র বৈদ্য, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সোমনাথ দে, সুজন দে, তরুন বসু।
উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, সাহিদুর রহমান টেপা, এস এম ফয়সল চিশতি, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সোলেমান আলম শেঠ, উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভুইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম সেন্টু, নুরুল ইসলাম নুরু, বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল।
এরশাদ বলেন, `আমার শাসনামলে ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে আমাদের এখানে একটি পত্রিকার উসকানিতে কিছু সংখ্যক মন্দিরে হামলা হয়েছিল। আমি ২৪ ঘন্টার মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি। ওই পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। সবকটি ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির আমরা সংস্কার করে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়েছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘গত ২৬ বছরে বিভিন্ন সরকারের আমলে আমরা নির্যাতিত হচ্ছেন, আপনাদের বাড়িঘরে আগুন লাগানো হচ্ছে। মন্দির ভাঙা হচ্ছে, পুরোহিতদের হত্যা করা হচ্ছে, ধর্ষিত হচ্ছে মা বোনেরা। আপনারা তো তার প্রতিকার পাচ্ছেন না। সম্প্রতি নাসিরনগরের ঘটনায় সরকারি দলের যে মন্ত্রী-এমপি জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।’
এরশাদ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে সারা দেশেই হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ব্যাপকভাবে নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। আপনারাই সেই কথা বিভিন্ন ফোরামে তুলে ধরছেন। এরপরও আপনারা কেন একটি বিশেষ দলের ভোটব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত থাকার অপবাদ নিয়ে বেড়াবেন।’
সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সারা দেশে আমাদের পার্টির ৩৪ জন এমপি আছেন, যে এলাকায় আমাদের এমপিরা দায়িত্বে আছেন সে এলাকায় সংখ্যালঘুদের কোনো বাড়ি ঘর মন্দিরে কেউ হামলা করতে পারেনি। আগামীতেও পারবে না। এতে করে প্রমাণ হয় জাতীয় পার্টির কাছে সব ধর্মের মানুষ নিরাপদ।’
বর্তমানে সরকারের উচ্চপদে হিন্দু সম্প্রদায়ের যারা দায়িত্বে আছেন তাদের সবাইকে এরশাদ নিয়োগ দিয়েছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু আগামীতে আমরা যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় না আসতে পারি তাহলে অদূর ভবিষ্যতে আর আপনাদের কোনো লোককে সরকারের উচ্চ পদে দেখবেন না। কারণ গত ২৬ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হলেও আপনাদের সম্প্রদায়কে চাকরিতে সুযোগ দেননি। তাই আগামীতে জাতীয় পার্টি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা হবে। উচ্চ শিক্ষা ও সরকারি চাকরিতে বিশেষ কোটা চালু করা হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন