বয়ফ্রেন্ড ছেড়ে যাবে, তাই সদ্যজাতকে জঙ্গলে ফেললেন মা!

মা হতে চাননি। কারণ, এতে বয়ফ্রেন্ড যদি তাকে ছেড়ে যায়। তাই নিজের সদ্যজাত সন্তানকে জঙ্গলে ফেলে দিলেন মা। আর সেখানে শিশুটিকে খাচ্ছিল পিঁপড়া।

মর্মান্তিক এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে ওই মায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খবর: ডেইলি মেইল।

সিডনি ওইতাজিক নামে ২১ বছর বয়সী মা জানান, তিনি মা হতে চাননি এবং নিজের সন্তানকে দেখতে চাননি। তাই নিজেদের হাউস্টন অ্যাপার্টমেন্টের কাছেই একটি জঙ্গলে নবজাতককে ফেলে দেন।

জানা গেছে, টেক্সাসের বাসিন্দা সিডনি নিজেদের কিচেনে শিশুটির জন্ম দেন। নাভি কেটে সদ্যজাত শিশুটিকে পার্শ্ববর্তী কণ্টকময় জঙ্গলে ফেলে আসেন মা। সেখানে অন্তত ছয় ঘণ্টা পড়েয়েছিল শিশুটি।

এক প্রতিবেশী দেখতে পান জঙ্গলের মধ্যে পড়ে থাকা সেই সদ্যজাত শিশুকে পিঁপড়া খাচ্ছিল। পুলিশে ফোন দেন ওই প্রতিবেশী। শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

এরপর রক্তের চিহ্ন অনুসরণ করে নবজাতকের মায়ের অ্যাপার্টমেন্টে যায় পুলিশ। সেখান থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
নবজাতককে বর্তমানে টেক্সাস চিলড্রেনস হসপিটালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র-আইসিইউতে রাখা হয়েছে এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তদন্তে ওই মা পুলিশকে জানান, বাচ্চা প্রসবের পর ভয় পেয়ে যান তিনি। কারণ তিনি এই পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। কিচেনের ফ্লোরে তার বাচ্চা প্রসব হয়। তারপর নাভি কেটে ওই জঙ্গলে সদ্যজাতকে ফেলে দিয়ে আসেন।

নাভি বেঁধে না আসার কারণে রক্তপাতে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা ছিল নবজাতকের। তবে ওই প্রতিবেশী দেখতে পেয়েছিলেন বলে তাৎক্ষণিক মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায় সদ্যজাত।

নবজাতককে ফেলে দেয়ার কারণ বলতে গিয়ে মা আদালতকে জানান, তিনি ভয় পাচ্ছিলেন তার বয়ফ্রেন্ড এ খবর জানতে পারলে তাকে ছেড়ে যেতে পারেন।

সিডনির সেই বয়ফ্রেন্ড দিয়ান্দ্রে স্কিলার্নকে পুলিশ আটক করেছে। আদালতে তিনি বলেন, তার গার্লফ্রেন্ডের গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি তার জানা ছিল না।

এদিকে শিশুটির বাবার পরিচয় নির্ধারণে স্কিলার্নের ডিএনএ পরীক্ষা চালানো হচ্ছে।

পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে। শিশুর প্রতি অবহেলা ও শিশু হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে।

এ অবস্থায় জামিন পেতে হলে ৪০ হাজার ডলার দিয়ে জামিন নিতে হবে আদালত থেকে বলা হয়েছিল। কিন্তু সিডনির আইনজীবী এটা আরও কমানোর জন্য আবেদন করেন।

আইনজীবীর যুক্তি, মেয়েটি জীবিকার জন্য রিটেইল শপে চাকরি করেন এবং মায়ের সঙ্গে বসবাস করছেন। এ অবস্থায় এত বেশি অর্থ দিয়ে জামিন নিতে পারবে না। মেয়েটির মানসিক অবস্থা বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত ২০ হাজার মার্কিন ডলারে জামিন ঠিক হয়।
এদিকে বিচারে সিডনি অপরাধী সাব্যস্থ হলে তার ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।