সংবাদ প্রকাশের পর দত্তক দেয়া সেই সন্তানকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিলেন ইউএনও

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে সংবাদ প্রকাশের পর অভাবের তাড়নায় দত্তক দেয়া সেই সদ্য ভূমিষ্ট কন্যা সন্তান মুক্তিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম ফেরদৌস।

শনিবার ১৮ ফেব্রুয়ারী রাতে বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যানের কক্ষে আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাবার কাছে মুক্তিকে হস্তান্তর করা হয়। মুক্তি ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়ন বানুরকুটি গ্রামের শফিকুল-মরিয়ম দম্পতির পঞ্চম সন্তান।

এর আগে শনিবার ভোরে জন্ম গ্রহন করে মুক্তি।পরে জন্মের কয়েক ঘন্টা পরে প্রতিবেশি মামাতো বোন লাকীর কাছে দত্তক দেয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে দত্তকের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর নড়েচরে বসেন প্রসাশন। পরে উপজেলা প্রসাশনের হস্তক্ষেপে শনিবার রাতেই মুক্তিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

অভিযোগ উঠেছিলো ২০হাজার টাকায় ওেই কন্যাসন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছিলো তার বাবা শফিকুল ইসলাম। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শফিকুল ইসলাম বলেন, টাকার নিয়ে আমার সন্তানকে আমি অন্যের কাছে বিক্রি করি নাই। অভাবের সংসারে এতগুলো সন্তানের ভরনপোষণ করতে পারবো না বলে দত্তক দিয়েছিলাম।যাতে আমার সন্তানরা অন্যের হাতে ভালো থাকে। এর আগেও আরেক মেয়েকেও অন্যের কাছে দত্তক দিয়েছি। এখন ফিরে পেয়ে খুশি হয়েছি।তবে বর্তমানে ছোট ছোট চার সন্তানের ভরণপোষন নিয়ে দু:শ্চিন্তায় আছি।
বঙ্গ সোনাহাট ইউপি চেয়ারম্যান মইনুল ইসলাম লিটন বলেন ,ওই ব‍্যক্তি পূর্বেও একটি সন্তান দত্তক দিয়েছে বলে জেনেছি। সদ‍্য ভূমিষ্ট নবজাতকেও তার মামাতো বোনের কাছে দত্তক দিয়েছে। অভাবের তাড়নায় নয় সন্তানকে দত্তক দেয়া তার স্বাভাবগত কারন। বিষয়টি জানার পর স্হানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্ধার করে শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এর আগেও তারা তাদের এক সন্তানকে দত্তক দিয়েছেন। এটা তাদের স্বভাবগত কারণে এমনটা করেছে। তিনি আরও বলেন, তাদেরকে বলা হয়েছে আপনারা যদি আপনার সন্তানকে দত্তক দেন অবশ্যই আইনগত ভাবে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন। টাকার বিনিময়ে যাতে তারা এমনটা না করেন এই বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বলে দেয়া হয়েছে।