সম্মিলিত প্রয়াসে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন সম্ভব হবে : সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অর্ধশতাব্দী অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে অদ্যাবধি একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন সম্ভব হয়নি। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগসহ সকলের সম্মিলিত ও সমন্বিত প্রয়াসে একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন সম্ভব হবে। এ স্বীকৃতি অর্জনে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংগঠন। তাঁর উদ্যোগে ২০১৭ সাল থেকে জাতীয়ভাবে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
শনিবার (২৫ মার্চ) প্রতিমন্ত্রী রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বসনিয়া, রুয়ান্ডা, মিয়ানমারসহ বেশ কয়েকটি দেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনসহ কয়েকটি পরাশক্তি দেশের পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান করার কারণে একাত্তরের (তখন) গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলেনি। তবে আমরা আশা করছি, দ্রুতই একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলবে। তিনি বলেন, একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়ে যেসব বই ও প্রকাশনা বের হয়েছে সেগুলোকে বাংলা একাডেমির মাধ্যমে ইংরেজিসহ আরো কয়েকটি ভাষায় অনুবাদের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বেসরকারিভাবে সম্প্রীতি বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারিভাবে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের নেতৃত্বে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র’ দেশব্যাপী গণহত্যা বিষয়ক জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে গণহত্যার প্রমাণক ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ৩৪টি জেলায় সাড়ে চার হাজার বধ্যভূমিসহ ১৭ হাজার ২৮৬টি গণহত্যা, গণকবর চিহ্নিত হয়েছে যাতে প্রতীয়মান হয় যে একাত্তরের গণহত্যার প্রকৃত সংখ্যাটি ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে এবং এর মাধ্যমে গণহত্যার সংখ্যাতাত্ত্বিক বিতর্কের অবসান ঘটবে।
‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ এর আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা সাবেক সচিব মুসা সাদিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দারসহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বসনিয়া, আর্মেনিয়া, রুয়ান্ডা, মিয়ানমারসহ বেশ কয়েকটি দেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক আদালতে এসব গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বক্তারা অনুরূপভাবে একাত্তরের গণহত্যার দ্রুত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন