গাইবান্ধায় সাঁওতালসহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত
সাঁওতালসহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর ভাষা-সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও বিকাশের দাবিতে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে জেলা একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে দুই ঘণ্টাব্যাপী সাংস্কৃতিক সমাবেশ করে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের যুবক-যুবতিরা।
গাইবান্ধা ডিবি রোড গানাসাস মার্কেটের সামনে নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ ও বেসরকারি সংগঠন অবলম্বনের সহযোগিতায় এ কর্মসূচির আয়োজিত হয়। শতাধিক আদিবাসী তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
জন উদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাজহার উল মান্নান, জেলা বারের সধারণ সম্পাদক ও আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহবায়ক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলার আহবায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, সচেতন নাগরিক কমিটির সহ-সভাপতি অশোক সাহা, ছাত্র নেতা উম্মে নিলুফার তিন্নি, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব হাসান মোর্শেদ দীপন, জেলা রবিদাস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক খিলন রবিদাস, আদিবাসী ইয়ুথ ফোরামের নেতা মেরিজান মুরমু, শিবানী পাহাড়ী, সোনালী মার্ডি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার এতো বছর পরেও বাংলাদেশে আদিবাসীদের নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের দাবি উপেক্ষিত হয়ে আসছে। বর্তমানে দেশের ৫০টির মতো আদিবাসী গোষ্ঠীর শিশু বংশ পরম্পরায় ভুলতে বসেছে তাদের নিজস্ব ভাষাগত ঐতিহ্য, লোকগাথা, প্রবাদ-প্রবচন ইত্যাদি। আদিবাসী শিশুদের নিজ মাতৃভাষায় অক্ষরজ্ঞান না থাকায় তাদের সংস্কৃতিও হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত। একটি শিশুর স্বকীয়তা, সৃজনশীলতা, মননশীলতা ও মেধার বিকাশ হয় তার মাতৃভাষার মধ্য দিয়ে। তাই আদিবাসী শিশুদের এ দেশে সাধারণভাবে শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে থাকা হতদরিদ্র আদিবাসী গোষ্ঠীর প্রত্যেকেরই নিজস্ব ভাষা ও নিজ ভাষার বর্ণলিপি শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু চর্চার অভাবে এসব বর্ণমালার সবই এখন বিলুপ্তপ্রায়। ফলে নতুন প্রজন্মের আদিবাসীরা নিজ ভাষায় কথা বলতে পারলেও নিজস্ব ভাষায় তারা একেবারে নিরক্ষর।
বক্তরা আরও বলেন, গাইবান্ধাসহ আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অবিলম্বে আদিবাসীদের জন্য পাঠ্যপুস্তক, গাইবান্ধা জেলায় আদিবাসী কালচারাল একাডেমি প্রতিষ্ঠাসহ তাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে রক্ষায় সরকারি উদ্যোগ নেয়ার দাবী জানান। বুকের রক্ত দিয়ে এ দেশ ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করে সারাবিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। অথচ এ দেশেই ভাষাগত সংখ্যালঘু জাতিগুলোর মাতৃভাষা কি বি ত থাকবে? বিকাশের জন্য মাতৃভাষা অত্যন্ত জরুরি। মাতৃভাষায় শিশু শিক্ষার বিকল্প তো হতে পারে না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন