সাগরে ভাসছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হিমশৈল

ফাটল ধরার পর অ্যান্টার্কটিকা থেকে ভেঙে আলাদা হয়ে গেছে অনেক বড় একটি বরফখণ্ড।অ্যান্টার্কটিকার ওয়েডেল সমুদ্রের রনে আইস শেলফের পশ্চিম পাশ থেকে ভেঙে গেছে এ হিমশৈল।

ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি বলছে, ১৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ আর ২৫ কিলোমিটার প্রশস্ত এ হিমশৈলের ভেঙে যাওয়াকে প্রাকৃতিক বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। কোনো কোনো দ্বীপের থেকেও এ বরফখণ্ডের আয়তন বেশি। নিউইয়র্ক শহরের চেয়ে ৬ গুণ বড় বড় বরফখণ্ড।

গ্লাসে ভেসে থাকা বরফ যেভাবে গ্লাসের পানি বাড়িয়ে দেয় না, সেভাবেই এ ভেসে থাকা বরফখণ্ড সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়াবে না বলে জানান বিজ্ঞানীরা। কিন্তু যে হিমশৈলগুলো স্থলভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে, সেই গ্লেসিয়ার বা বরফখণ্ড গলে গেলে বাড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। যদি অ্যান্টার্কটিকার পুরো বরফ গলে যায় তাহলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১৯০ ফিট পর্যন্ত বেড়ে যাবে।

বরফখণ্ডটি সর্বপ্রথম ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের সঙ্গে আবিষ্কার করে ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি। এটির নাম দেওয়া হয়েছে এ সেভেনটি সিক্স। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বরফখণ্ডের জন্য এ নামটি সামঞ্জস্যপূর্ণ না থাকলেও এ নামের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে।

অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের সবচেয়ে বড় বরফ অংশের একটি রনে আইস শেলফ। এ আইস শেলফই মহাদেশের স্থলভাগের সঙ্গে সমুদ্রকে সংযুক্ত করেছে। আরেকটি আছে রস আইস শেলফ।

গবেষকদের তথ্য মতে, অ্যান্টার্কটিকার ৪৫ শতাংশ বরফ সেল, ৩৮ শতাংশ বরফ দেয়াল, ১৩ শতাংশ বরফ স্রোত এবং বাকি ৪ শতাংশ হলো শিলা দিয়ে গঠিত। অ্যান্টার্কটিকা হলো বরফের আধার। মাঝে মধ্যে আছে বরফ পাহাড় আর দুটো সাগর। অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের মাঝে আছে ‘ট্রান্সঅ্যান্টার্কটিক’ পর্বতশ্রেণি, যা এ মহাদেশকে পূর্ব ও পশ্চিম অংশে ভাগ করেছে।

এর আগে চলতি বছরের মার্চে পৃথিবীর একমাত্র বরফে ঘেরা বৃহত্তম অঞ্চল অ্যান্টার্কটিকার হিমশৈলে বিশাল ফাটল দেখা যায়। ব্রুন্ট আইস শেলফে এ ফাটল দেখা যায়। অ্যান্টার্কটিকা বছরে ১১ হাজার ৮শ’ কোটি মেট্রিক টন বরফ হারাচ্ছে।