সাতক্ষীরার দেবহাটায় ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার আগেই পদ বাণিজ্যের অভিযোগ
সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হতে চান অস্ত্র মামলার আসামী জিল্লুর রহমান জীবন। জীবন উপজেলার সেকেন্দ্রা গ্রামের প্রফেসর আব্দুল কাদেরে ছেলে। ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টম্বর র্যাব-৬’র খুলনার একটি অভিযানিক দলের হাতে হাতে অস্ত্রসহ আটক হয় জীবন।
জানা যায়, ২০২১ সালের (১৩ ডিসেম্বর) উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করেন জেলা ছাত্রলীগ। এরপর থেকে অভিভাবকহীন হয়ে যায় দেবহাটা উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মীরা। সম্প্রতি উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি প্রদানের গুঞ্জন উঠলে সভাপতি পদ পেতে জীবন সহ বিভিন্ন প্রার্থীরা বিভিন্ন মহলে দৌড় ঝাপ শুরু করেছে বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে।
এদিকে, সভাপতি হওয়ার আগেই পদ পাইয়ে দেওয়ার নামে বিভিন্ন কর্মীর অর্থ বানিজ্যেরও অভিযোগ পাওয়া যায় জীবনের বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছু ইউনিয়ন ছাত্রলীগের এক সভাপতি প্রার্থী ও জীবনের মেসেঞ্জার কনভারসেশনে দেখা যায়, কনভারসেশনে জীবন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান আশিক কে কমিটি নিতে অর্থ দিয়েছে বলে দাবি করে। এছাড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন হোসেনকে নিয়ে কটাক্ষ করে।
মেসেঞ্জার কনভারসেশন এর কিছু অংশ তুলে ধরা হলো।
জীবন: চিন্তা করো না আমি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হব।
ছাত্রলীগ কর্মী: তাহলে কিন্তু আমাকে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি বানাতে হবে ভাই।
জীবন: হবে তবে কিছু খরচ করতে হবে কিন্তু।
ছাত্রলীগ কর্মী : তাহলে আর ছাত্রলীগ কি করে করব ভাই?
জীবন: কি করার বল উপর থেকে এটাই চলছে। আমি হব দেবহাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবার তুমি চিন্তা করে দেখো কি করবে। আশিককে মাল দিয়ে পটিয়ে রেখেছি আর কোন চিন্তা নেই। দেবহাটায় আমি ফানটু এবং বাংলার ফার্মেসি তৈরি করব যদি সভাপতি হই।
ছাত্রলীগ কর্মী : হাসি পেলাম ভাই।
জীবন: শুধু একবার সভাপতি হতে দাও কাউকে চ★★ না দেবহাটায়।
অপরদিকে, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মাদক সেবনসহ বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে আলোচনা আসে জীবন। যে কারণে বিভিন্ন সময়ে হয়েছে সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম।
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত দেবহাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী জিল্লুর রহমান জীবন বলেন, র্যাব আমাকে গ্রেফতার করে এটা সত্য। তবে আমাকে মিথ্যা অস্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়। কমিটি নিতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কে টাকা দেয়ার বিষয় জীবন বলেন, কমিটি নিতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান আশিক ভাইকে টাকা দেওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। আমি নিজ যোগ্যতায় কমিটি নিতে আগ্রহী। এছাড়া মেসেঞ্জার কনভারসেশনটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছেন তিনি।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান আশিক বলেন, ছাত্রলীগের কমিটিতে কোন বিতর্কিত লোকজনের স্থান নেই। কমিটি হওয়ার আগে অনেকেই অনেক কথা বলে, তবে আমরা ত্যাগী কর্মীদের ছাত্রলীগের কমিটিতে রাখব। কোন বিতর্কিত লোকজনকে নয়।
দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি বলেন, জিল্লুর রহমান জীবন বিভিন্ন সময়ে মাদক সেবনসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কার্যক্রম করে বলে আমি জেনেছি। বিতর্কিত কেউ ছাত্রলীগের কমিটি না আসুক এটা আমরা চাই। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের মতামত নিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি হয় না, এটা খুব দুঃখজনক।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন