লালমনিরহাটে মাদক বহনের রাজি না হওয়ায় ‘যুবককে’ বিবস্ত্র করে নির্যাতন

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে মাদক ব্যবসায় সহযোগী হিসেবে কাজ না করায় সুমন মিয়া (২৫) নামের এক যুবককে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করে পেটানো হচ্ছে। নির্যাতনের এমন ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

জানা গেছে, গত (২৫ জুলাই) রাত ১১টার দিকে উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের লতাবর গ্রামে মিলনের বসতবাড়ির একটি কক্ষে এ নির্যাতনের শিকার হয় ওই যুবক। নির্যাতনের শিকার হওয়া যুবক উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের লতাবর এলাকার এন্তাজ আলীর ছেলে।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২-৩ মাস আগে একই এলাকার মাদক ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম মিলন ও তার চাচাতো ভাই লিমন মিয়া মাদক পরিবহণে কাজ করতে সুমনকে প্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় তারা সুমনের ওপর ক্ষুব্ধ হন। এরই জেরে মঙ্গলবার লতাবর এলাকার মোন্দাদিঘির পাড় থেকে সুমনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় মিলনের বাড়িতে। সেখানে এন্তাজ আলীর ছেলে সুমন তাদের সহযোগী রংপুরের রবিউল ও মিস্টারসহ অজ্ঞাত আরও ২-৩ জন সুমনকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেন। এ নিয়ে কাউকে কিছু জানালে ধারণ করা ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তারা।

এদিকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দুইটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, দুজন লোক লোহার পাইপ এবং হাত-পা দিয়ে বেধড়ক মারধর করছেন সুমনকে। একপর্যায়ে তার বিশেষ অঙ্গে পানির বোতল ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয়। এ সময় সুমন কান ধরে বারবার মাফ চাইলেও নির্যাতন অব্যাহত রাখেন তারা। ভুক্তভোগী সুমন বলেন, মিলন মাদকের একজন গডফাদার। বিষয়টি কাউকে জানালে তারা আমাকে আর বাবাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন আগেও মিলনের কিছুই ছিল না। বর্তমানে মাদক ব্যবসা করে গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন। তার বিষয়ে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় দিনদিন তিনি শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মাদক মামলা রয়েছে।

মোবাইল ফোনে মিলন সঙ্গে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছি। সুমনকে অন্য এক মাদক ব্যবসায়ী তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছিল। আমি তার মা-বাবার অনুরোধে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি মাত্র। এখন সুমন সেই মাদক ব্যবসায়ীর কাছে টাকা নিয়ে আমার নামেই মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আর ভিডিওতে তাকে নির্যাতন করতে দেখা যাওয়া প্রসঙ্গে মিলন বলেন, ওই ভিডিও এডিট করে আমার মাথা বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। দ্রুত আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।