সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহর হামলা মামলার পরবর্তী ধার্য দিন ১৯ জানুয়ারি

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সাবেক বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার যুক্তিতর্কের জন্য ১৯ জুন দিন ধার্য করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. হুমায়ুন কবীর বুধবার এ দিন ধার্য করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. পারভেজ আলম খান, জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ, সাবেক পিপি অ্যাড. এসএম হায়দার আলী, সাবেক পিপি অ্যাড. তপন কুমার দাস, সাবেক পিপি অ্যাড. ওসমান গনি, অ্যাড. শহীদুল ইসলাম পিন্টু, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. সৈয়দ জিয়াউর রহমান, অ্যাড. রেজাউদ দৌলা সবুজ প্রমুখ।

আসামীপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন বাংলাদেশ হাইকোর্টের অ্যাড.শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাড. আব্দুল মজিদ (২), অ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাড কামরুজ্জামান ভুট্টো প্রমুখ।

মামলার কার্যক্রম শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাড. পারভেজ আলম খান ও পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ ২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা ও পরবর্তীতে পুলিশ মামলা না নেওয়া, আদালতের নির্দেশে পুৃলিশ মামলা নিলেও ঘটনা মিথ্যা বলে আদ্লাতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া, আদালতে না রাজি ও রিভিশন খারিজ হওয়াসহ তৎকালিন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে রাষ্ট্রীয় পরিস্থিতি সম্পর্কে আদালতকে অবহিত করেন। এরপরপরই বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর অসুস্থ থাকার কারণে তিনি সাতক্ষীরায় এসে যুক্তিতর্কে অংশ নিতে না পারায় ১৯ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্যের আবেদন করেন। আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আব্দুল মজিদ(২) ও মিজানুর রহমান পিন্টু ১৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করলে তাদের কোন আপত্তি নেই বলায় আদালত তা মঞ্জুর করেন। একইসাথে ওই দিন যুক্তিতর্ক শেষ করা না গেলে পরবর্তী দু’দিনে তা শেষ করা যেতে পারে বলে মতামত দেন।

প্রসঙ্গত,২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলদি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে দেখে মাগুরায় ফিরে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে বি এন পির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় থানা মামলা না নেওয়ায় ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদি হয়ে যুবদল নেতা আশরাফ হোসেন, আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ২৭ জনের নাম উলে­খ করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৭৫ জনকে আসামী করে সাতক্ষীরা নালিশী আদালত ‘ক’ অঞ্চলে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বিভিন্ন আদালত ঘুরে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করা হয়। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান ৫০ জনের নাম উলে­খ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে এসটিসি ২০৭/১৫, এসটিসি ২০৮/১৫ দু’টি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২য় আদালতে বিচারাধীন।

২০১৭ সালের ৯ ও ২৩ আগষ্ট আসামীপক্ষ মামলা তিনটির কার্যক্রম হাইকোর্টে স্থগিত করেন। দীর্ঘ তিন বছর পর আসামী পক্ষের মিসকেস খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্ট পেনালকোর্ডের মামলাটি(টিআর-১৫১/১৫) ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেন। বিষ্ফোরক দ্রব্য আইন ও অস্ত্র আইনের মামলা দু’টি গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি মোস্তফাজামান ইসলাম ও বিচারপতি কামরুল ইসলাম মোল্যার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আসামীপক্ষের স্থগিতাদেশ ও আপিল খারিজ করে দেয়। মামলায় ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। ৫০ জন আসামীর মধ্যে ১৬ জনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। আসামী টাইগার খোকন অন্য মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন।