সারাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট মাত্র একদিন বাকি। ৭ জানুয়ারি ২৯৮ আসনে একযোগে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে। সারা দেশে ৬৫৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নামছেন। যে কোনো অপরাধ দেখলেই তাদের তাৎক্ষণিক বিচারের মাধ্যমে দোষীকে সাজা দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে বলা হয়েছে।

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই সারাদেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় ও পরে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় ৩ জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে।

সারাদেশে ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৪৩ জন সদস্য মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (ভিডিপি)। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এবার ১ কোটি ৫৪ লাখ নতুন ভোটারসহ সারা দেশে ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৯৬ লাখে। তবে মোট ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৬ কোটি ৭৬ লাখ ও নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ। আর ট্রান্সজেন্ডার ভোটার ৮৪৯ জন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের জন্য ৪২ হাজার ২৪টি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩ হাজার ১১৩টিই ঝুঁকিপূর্ণ। অর্থাৎ মোট ভোটকেন্দ্রের অর্ধেকের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এদিকে, নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে শনিবার মধ্যরাত থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য ট্যাক্সিক্যাব, পিকআপ ভ্যান, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসনের সদস্য ও অনুমোদিত পর্যবেক্ষক, জরুরি সেবার যানবাহন, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, অভিন্ন কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং সংবাদপত্র বহনকারী সব ধরনের যানবাহন, দূরপাল্লার যানবাহন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের ক্ষেত্রে এই বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক, নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী, জাতীয় মহাসড়ক, আন্তঃজেলা বাস রুট, মহাসড়ক এবং প্রধান মহাসড়কের সংযোগ সড়কের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। এর আগে প্রচার শেষ হয়েছে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টায়।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে নির্ধারিত সময়ের পর কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল ও প্রচারের অনুমতি দেবে না। গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়। তবে ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। রোববার এ নির্বাচনে ২৯৮ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একজন বৈধ প্রার্থী মারা যাওয়ায় নওগাঁও-২ আসনের ভোট বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। ইসির হিসাবে বর্তমানে ১৯৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৩৬ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী। আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছেন ২৬৬টি আসনে। যদিও অনেক আসনে নির্বাচন থেকে বেশ কয়েকজন প্রার্থী সরে গেছেন। তারা নির্ধারিত সময়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় ব্যালটে নাম থেকে যাচ্ছে। তবে বিএনপিসহ ১৬টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। ভোটগ্রহণ সামনে রেখে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো শনি ও রোববার ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে।