সাহিত্যে নোবেল দেয়ার যোগ্যতা হারাচ্ছে সুইডিশ অ্যাকাডেমি

যৌন কেলেঙ্কারির কারণে সাহিত্যে নোবেল দেয়ার যোগ্যতা পুরোপুরি হারাতে পারে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি। নোবেল ফাউন্ডেশনের প্রধান লার্স হেইকেনস্টেন বলেছেন, যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ নিয়ে সুইডিশ অ্যাকাডেমি যদি কোনও কড়া পদক্ষেপ না নেয় তাহলে এর ফল ভোগ করতে হবে তাদের। আগামীতে অন্য কোনও সংগঠনকে দিয়ে এই পুরস্কার দেওয়ার দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন বলে জানান তিনি।

বেশ কয়েক মাস আগে সুইডিশ অ্যাকাডেমির ১৮জন নারীকর্মী সুইডেনের সাংস্কৃতিক জগতের অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি জিনক্লড আর্নল্টের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে তুলে একসঙ্গে পদত্যাগ করে। এরপরই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ৭২ বছর বয়সী ফরাসি নাগরিক আর্নল্ট তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করছি সুইডিশ অ্যাকাডেমিই ২০১৯ সালে সাহিত্যে নোবেল দেবে।’

২০১১ সালে এক নারীকে দু’বার ধর্ষণের মামলার শুনানিতে চলতি মাসে আদালতে হাজিরা দিয়েছেন আর্নল্ট। চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত একটি মামলার জন্য তাকে রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।

সুইডিশ অ্যাকাডেমির সদস্য ক্যাটারিনা ফ্রস্টেনসনের স্বামী জিনক্লড আর্নল্ট গত কয়েক দশক ধরেই দেশটির সাংস্কৃতিক মহলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের একজন। স্ত্রীর ক্ষমতার কারণে তিনি নিজেকে অ্যাকাডেমির ১৯তম সদস্য বলে দাবি করেন।

পদত্যাগ করা ওই ১৮ নারীকর্মীর অভিযোগ নিয়ে সুইডিশ অ্যাকাডেমি তদন্ত করে জানতে পারে শুধু কর্মীরাই নয় অ্যাকাডেমির অনেক নারী সদস্য এবং অনেক সদস্যদের স্ত্রী এবং মেয়েরাও আর্নল্টের যৌন লালসার শিকার হয়েছেন। তারপরও অ্যাকাডেমি আর্নল্টের বিরুদ্ধে তেমন কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় এমন সিদ্ধান্তের কথা ভাবছে নোবেল ফাউন্ডেশন।

উল্লেখ্য, ১৯০১ সাল থেকে সাহিত্যের সবচেয়ে মর্যাদার এই পুরস্কার দিয়ে আসছে সুইডিশ একাডেমি। তবে সুইডিশ নোবেল কমিটিতে যৌন কেলেঙ্কারি নিয়ে তৈরি হওয়া অস্থিরতাকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা স্থগিত করা হয়। এরপর সুইডিশ একাডেমি বিবৃতি দিয়ে জানায়, ২০১৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে না। তবে আগামী বছর ২০১৮ এবং ২০১৯ সালের বিজয়ীর নাম এক সঙ্গে প্রকাশ করা হবে।