সিটি নির্বাচন সরকার ও ইসির জন্য অগ্নিপরীক্ষা

একাদশ নির্বাচনের আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোকে ‘সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অগ্নিপরীক্ষা’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

রোববার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, রংপুরসহ বিভিন্ন সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি। কেননা এসব নির্বাচন একাদশ নির্বাচনের পূর্বে হচ্ছে। তাই এসব নির্বাচনে আমরা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কী আচরণ- তা দেখতে চাই। কারণ, এসব নির্বাচন সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি অগ্নিপরীক্ষা। এসব পরীক্ষা আমরা দেখতে চাই এবং গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে চাই।

সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার ফোরামের উদ্যোগে ‘গুম, খুন ও নির্যাতন বন্ধের দাবিতে করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সাউথ এশিয়া ল’ইয়ার্স ফোরামের সদস্য অ্যাডভোকেট রফিক সিকদার।

গুম হওয়া লাকসাম পৌর বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির পারভেজের স্ত্রী শাহনাজ আকতার রানুর সভাপতিত্বে ও সাবেক ছাত্রনেতা রবিউল হোসেন রবির পরিচালনায় আলোচনা সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদষ্টো আবদুস সালাম, সিদ্দিকুর রহমান খান, আনোয়ারুল আজীম, কেন্দ্রীয় নেতা বদিউজ্জামান আকন্দ, মিয়া মো. আনোয়ার, সৈয়দ মো. ওমর ফারুক, জাহাঙ্গীর আলম, কাদের সিদ্দিকী, মো. হোসেন খান লিটন, গুম হওয়া পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম হিরুর ছেলে রাফসানুল ইসলাম, লাকসাম পৌর বিএনপির সভাপতি হুমায়নুর কবির পারভেজের ছেলে শাহরিয়ার রাতুল ও সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন আফরোজা আক্তার আঁখি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া নির্বাচনকালীন সরকারের একটা রূপরেখা দেবেন। সেই রূপরেখা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব এবং যদি আমরা দেখি এই সরকার আবার ২০১৪ সালের মতো নির্বাচনের দিকে হাঁটছে, আমরা বিশ্বাস করি, এবার আর জনগণ তা হতে দেবে না। মানুষ রাস্তায় নেমে তাদের দাবি আদায় করে, তাদের ভোটের অধিকার আদায় করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাবে, ইনশাল্লাহ। আমরা জনগণের সঙ্গে থাকব।

দেশে ‘গুম-খুন’-এর পেছনে ‘রাষ্ট্রযন্ত্রের সম্পৃক্ততা’ রয়েছে অভিযোগ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জানে কারা গুম করেছে, কার নির্দেশে হয়েছে এবং কিছু কিছু উদাহরণ আমাদের সামনে আছে। নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনা যদি হজম করে ফেলত তাহলে কখনও কেউ স্বীকার করত না যে, র‌্যাবের কর্মকর্তারা এর সঙ্গে যুক্ত আছে। আজকে র‌্যাব কর্মকর্তারা ধরা পড়ার কারণে এটা প্রমাণিত হয়েছে। আগামীতে ক্ষমতায় গেলে গুম-খুনের বিচার হবে বলে জানান তিনি।

‘গুম’ নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দিয়ে ‘বিভ্রান্তি’ সৃষ্টি করছেন মন্তব্য করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, রাষ্ট্রীয় নির্দেশে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে এভাবে পৃথিবীতে কোনো গুমের ঘটনা ঘটছে না। বাংলাদেশের গুম এবং অন্যান্য দেশের গুমের মধ্যে তফাৎ অনেক। অন্যান্য দেশে গুম হয় শত্রুতা করে বা পণ আদায়ের জন্য। কিন্তু বাংলাদেশের ঘটনার সঙ্গে প্রশাসন ও সরকারি বাহিনী জড়িত।