সিন্ডিকেটে জিম্মি চালের বাজার, অস্থিতিশীলকারীদের গ্রেফতারের দাবি

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রেক্ষাপটে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব জিনিসের দাম বেড়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষেরা। মূল্যবৃদ্ধির এ তালিকায় উপরের সারিতে আছে চাল। হু হু করে বাড়ছে চালের দাম। বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ মনে করে, চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট মজুতের মাধ্যমে বাজার অস্থিতিশীল করে তুলছেন। এতে বাজারে চালের কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে। অতি মুনাফালোভী এই সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি চালের বাজার। ফলে খুচরা ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যায়েও বেড়েছে ভোগান্তি।

এ অবস্থায় মুনাফাখোর চাল সিন্ডিকেট, মজুতদার ও বাজার অস্থিতিশীলকারীদের শিগগির গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ।

রোববার (২৮ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।

মানববন্ধনে সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত উৎপাদন রয়েছে। সরকার চাল আমদানিতে শুল্কও কমিয়েছে। সরকার যেমন আমদানি করেছে, বেসরকারি উদ্যোগেও বিদেশ থেকে আসছে চাল। কিন্তু অনেক চাল ব্যবসায়ী আমদানির অনুমতি পেয়েও আমদানি করেননি। সরকার এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি।

বক্তারা বলেন, প্রতি সপ্তাহে চালের দাম বাড়ানো কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও পরিবহন খরচ বাড়ার অজুহাতে অতি মুনাফাভোগী সিন্ডিকেট চালের দাম বাড়াচ্ছে। তবে এর সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে বিভিন্ন স্থানে দূরত্ব অনুসারে পরিবহন খরচের হিসাব মিলেছে নগণ্য।

তারা বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর দিনাজপুর থেকে ২৫০ বস্তা (১৭ হাজার ৫০০ কেজি) চাল নিয়ে একটি ট্রাক ঢাকায় এলে ভাড়া গুনতে হয় ১৮-২০ হাজার টাকা। এর সঙ্গে প্রতি বস্তায় (৭০ কেজি) লেবার খরচ ও আড়তদারি মিলে আরও ১৪ টাকা যোগ হয়। সব মিলিয়ে কেজিপ্রতি চালের পরিবহন খরচ দাঁড়ায় ১ টাকা ২২ পয়সা থেকে ১ টাকা ৩৪ পয়সা। অথচ বাজার সিন্ডিকেট প্রতি কেজি মোটা চালসহ অন্যান্য চালের দাম ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিচ্ছে। যা মোট খরচের ১২ গুণেরও বেশি।

মানববন্ধন থেকে জানানো হয়, সারাদেশের চালকল মালিকদের নিয়ন্ত্রণে আনতে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে অটো রাইস মিলার্স অ্যাসোসিয়েশনকে একটি নীতিমালার মধ্যে এনে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত বাজার অস্থিতিশীলকারীদের তালিকা অনুযায়ী তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মো. শেখ ফরি ও মোহম্মদ শেখ ফরিদ উদ্দিনসহ সংগঠনটির সদস্যরা।