সিরাজগঞ্জে কবি ইসমাইল হোসেন সিরাজীর ১৪২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম বলেছেন, ইসমাইল হোসেন সিরাজীকে মুসলিম জাগরণের কবি বলা হয়ে থাকে। কিন্তু তিনি শুধু মুসলিম নয় বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে গণজাগরণ তৈরি করেছেন। তিনি নারী জাগরণেরও কবি।

গত বুধবার (১৩ জুলাই) রাতে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার শহীদ এম মনসুর আলী অডিটোরিয়ামে কবি ইসমাইল হোসেন সিরাজীর ১৪২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন।

তিনি বলেন, মুসলিম সম্প্রদায় যখন পিছিয়ে ছিলো তখন কবি ইসমাইল হোসেন সিরাজী মুসলিমদের জাগরণের জন্য তার কাব্যকে নিয়োজিত করেছিলেন। এটাকে সাম্প্রদায়িক হিসেবে দেখা যাবে না। যখন মুসলিম শিক্ষাকে বিকশিত করার জন্য উদ্যোগের কথা বলা হয়েছিল, তা হিন্দুরা অতটা গ্রহণ করেনি। তখন কিন্তু কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও বলেছিলেন, মুসলিমরা শিক্ষা ও সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। তাদের দাবী দাওয়া যৌক্তিক।

তিনি আরও বলেন, ইসমাইল হোসেন সিরাজী পর্দা প্রথার বিরোধীতা করেছেন। তিনি বলেছিলেন এটি আসলে নারী জাতির বিকাশকে বাধাগ্রস্থ করে। সেই বাধাকে অতিক্রম করতে হবে। তার উপন্যাসে নারীর প্রাধান্যতা ছিল। তিনি নারীদের সৃজনশীলতা ও নেতৃত্বগুন সেটা তুলে ধরেছেন। এই ক্ষেত্রে তিনি নারী জাগরণেরও কবি।

রবি ভিসি আরও বলেন, ইসমাইল হোসেন সিরাজী কবিতা লেখার জন্য কারাবরণ করেছেন। বৃটিশ বিরোধী সংগ্রামকে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি কবিতা লিখেছিলেন। তার কাব্যের তীব্রতা ও কার্যকরিতা ছিল সেটা মানুষকে বিপ্লবী করে তোলে। এ কারণে শোষকেরা কবিকে কারাগারে পাঠায়। সেই অর্থে ইসমাইল হোসেন সিরাজী গণজাগরণের কবি। বৃটিশ থেকে ভারতকে মুক্ত করার আন্দোলনের অনুপ্রেরণা দাতা ছিলেন ইসমাইল হোসেন সিরাজী।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, পুলিশের উপ-সহকারী মহাপদির্শক হাসিবুল ইসলাম বিপিএম, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসান, সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ টিএম সোহেল, পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা প্রমূখ।
আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ইসমাইল হোসেন সিরাজীর লেখা গান ও কবিতা আবৃতি করেন শিল্পীবৃন্দ।