সিলেটের গোলাপগঞ্জে মৎস কর্মকর্তাকে স্যার না ডাকায় সাংবাদিকের উপর ক্ষেপে গেলেন
দেশ জুড়ে গত কয়েক দিন ধরে আলোচনার ঝড় উঠেছে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে । এমন একটি ঘটনা ঘটেছে সিলেটের গোলাপগঞ্জে এক মৎস্য কর্মকর্তাকে ভাই ডাকায় আপত্তি জানিয়েছেন একই কার্যালয়ের উপসহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলা মৎস্য অফিসে গিয়েছিলেন স্থানীয় সাংবাদিক ফাহিম আহমদ। তিনি বলেন, “অফিসে মৎস্য কর্মকর্তাকে না দেখে উপসহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে বলি, ভাই (মৎস্য কর্মকর্তা হাসিবুল হাসান) কোথায়? এ কথা বলতেই তিনি রেগে গিয়ে বলেন, ‘ভাই কেন ডাকলেন, একজন বিসিএস ক্যাডারকে কী ভাবে ডাকতে হয় আপনি জানেন না?’ কী বলে ডাকতে হবে জানতে চাইলে উপসহকারী মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘ফিশারিজ অফিসার ডাকবেন।’ এ ঘটনার পর সঙ্গে থাকা আরও দুজন সহকর্মী প্রতিবাদ জানান।
ফাহিম আরও বলেন, ‘তাঁরা সাংবাদিকদের সঙ্গে যদি এমন আচরণ করেন তাহলে সাধারণ জনগণের সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করছেন তা জানা নেই।’
এ বিষয়ে উপসহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘কয়েক জন লোক অফিসে এসে জানতে চাই ছিলেন ভাই কোথায়, আমি তাঁদের বলি ভাই কে? তখন তাঁরা মৎস্য কর্মকর্তার কক্ষ দেখালে, আমি বলি মৎস্য কর্মকর্তা একজন বিসিএস কর্মকর্তা। একটু শালীনতার সঙ্গে বলুন। এতে তাঁরা রাগ করে থাকলে আমি দুঃখিত। আমি মৎস্য কর্মকর্তাকে স্যার ডাকার কথা বলিনি।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. হাসিবুল হাসান বলেন, ‘ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি উপস্থিত ছিলাম না, থাকলে এটি হতো না। সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা এটি ভুল করেছেন। বিয়ানীবাজার উপজেলায় ছিলাম, গোলাপগঞ্জে আমি অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছি।
এর আগে ‘স্যার না বলায়’ রংপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ক্ষুব্ধ আচরণ করেছেন এমন অভিযোগ তুলে ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক। ওই ঘটনার পর ডিসি চিত্রলেখা নাজনীন সেদিন দুঃখ প্রকাশ করে ওই ঘটনার ইতি টানলেও সরকারি চাকরিজীবীদের ‘স্যার’ ডাকা না-ডাকা নিয়ে এখনো চলছে আলোচনা।
স্যার ডাকার বিষয়ে শনিবার (২৫ মার্চ) জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি কর্মচারীরা জনগণের সেবক। তাঁদের স্যার বা ম্যাডাম ডাকার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ভদ্রতার খাতিরে অনেকে স্যার বা ম্যাডাম ডাকেন। কিন্তু এটি ডাকা বাধ্যতামূলক নয়। কেউ যদি আপা বা ভাই ডাকেন, তাতে দোষের কিছু নেই। এতে মাইন্ড করারও কিছু নেই। সরকারি চাকরিজীবীরা জনগণের সেবক, এই চিন্তা থেকেই কাজ করতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন