সিলেটে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উদ্যোগে প্রশিক্ষণ কোর্স

সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পে শিক্ষিত ভিডিপি তরুণদের কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্ত সৃষ্টির লক্ষ্যে পর্যটন নগরী সিলেটে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী’র উদ্যোগে ‘ক্যাটারিং সার্ভিস স্টাফ এন্ড হসপিটালিটি ম্যনেজমেন্ট’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সের শুভ সূচনা হয়েছে।

সিলেট বিভাগের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ ইউরোপ, আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া, মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হোটেল ট্যুরিজমসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থেকে দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে চলেছেন। স্থানীয় পর্যায়েও পর্যটকদের আকর্ষণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং গড়ে উঠছে নিত্য নতুন উন্নতমানের হোটেল, মোটেল এবং রিসোর্ট। পর্যটন শিল্পের এসকল প্রতিষ্ঠানে পেশাদারীত্বে উন্নত জ্ঞানসম্পন্ন কমর্ীদের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অঞ্চলে কমিউনিটি ট্যুরিজমেরও রয়েছে অপার সম্ভাবনা। এ ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও সম্ভাবনা সমূহ পর্যবেক্ষণ করে সিলেট বিভাগের চারটি জেলার ২০ শিক্ষিত তরুণ ভিডিপি সদস্যদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সিলেট রেঞ্জের প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে পাইলট প্রকল্প হিসেবে কোর্সটি চালু হলো যা সফলভাবে সম্পন্ন হলে ৬৪টি জেলাতেই সম্প্রসারিত হবে।

৩ জুন, বৃহস্পতিবার আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সিলেট জেলা নবস্থাপিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কোর্সটি উদ্বোধন করেন বাহিনীর সিলেট রেঞ্জের রেঞ্জ কমান্ডার মোঃ রফিকুল ইসলাম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

সিলেট জেলা কমান্ড্যান্ট এনামুল খঁান এর সভাপতিত্বে ও সার্কেল অ্যাডজুট্যান্ট এ এস এম এনামুল হকের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী জেলা কমান্ড্যান্ট প্রদীপ চন্দ্র দত্ত, সিলেট রেঞ্জের সহকারী পরিচালক মশিউর রহমান মানিক, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা জামালগঞ্জ ফয়সল আহমদ চৌধুরী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, ‘বাহিনীর মহাপরিচালক মহোদয়ের সানুগ্রহ সম্মতিতে এবং অনুপ্রেরণায় অতি অল্প সময়ের মধ্যে আমরা এ ট্রেনিংটি চালু করতে পেরেছি। মাত্র তিন দিন মেয়াদে অনলাইন আবেদন আহবান করা হলে ২০ জন প্রশিক্ষণার্থির বিপরীতে ২১৫জন তরুণ আবেদন দাখিন করেন। সিলেট রেঞ্জের চারটি জেলার জেলা কমান্ডান্টগণ লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে প্রতি জেলা হতে ০৫ জন করে ভিডিপি (পুরুষ) সদস্য প্রশিক্ষণার্থি হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। ২০জন ভিডিপি সদস্যের সাথে ও ০৪ জন ব্যাটালিয়ন আনসারসহ মোট ২৪ নিয়ে পরীক্ষা মূলকভাবে কোর্সটিতে অংশগ্রহণ করলো।

এ কোর্সটির মেয়াদ মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ দিন এবং কোর্সটি আবাসিক। প্রশিক্ষণটি পরিচালিত হবে সম্পূর্ণ সরকারী অর্থ ব্যয়ে এবং প্রশিক্ষণাথর্ীদের কোন অর্থ ব্যয় হবে না। বরং কোর্স শেষে সনদ পত্রের সাথে প্রশিক্ষণার্থিদের আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের কিছু শেয়ার এবং পোশাক বাবদ নগদ ২০০০.০০ টাকা প্রদান করা হবে। পরীক্ষামূলক কোর্সটির সুবিধা, সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতা বিশ্লেষণ করে আগামীতে সারা বাংলাদেশে কোর্সটি চালু হবে এর ফলে প্রতি প্রশিক্ষণ বর্ষে প্রায় পঁাচ হাজার শিক্ষিত তরুণ দেশে এবং বিদেশে রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসেবে সক্ষমতা অর্জন করবে এবং পর্যটন শিল্পে সম্পৃক্ত হয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
উক্ত প্রশিক্ষণে রিসোর্স পারসন হিসেবে ইউনির্ভাসিটির শিক্ষক, পর্যটন শিল্প হতে বিশেষজ্ঞগণ, ফাইভ-স্টার মানের হোটেল হতে অভিজ্ঞজনদেও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে উপস্থিতি এবং ভাচুর্য়াল মাধ্যমে বিষয় উপস্থাপনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। তাদের বিষয় সম্পর্কিত প্রশিক্ষণের বাইরেও ব্যবহারিক ইংরেজি ভাষা শিক্ষা ও অন্যান্য নৈতিক ও মানবিক বিষয় প্রশিক্ষণ কোর্সের অন্তভর্ূক্ত থাকবে।২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্য অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের পরিণতকরণে এ ধরনের প্রশিক্ষণ অনেকটা সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
জনশক্তিকে দক্ষ জনসম্পদে রূপান্তরের জন্য এ ধরনের প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই বলে প্রধান অতিথি দাবি করেন তিনি।