সিলেট জুড়ে স্বামীর হাতে এক বছরে ৮ নারী খুন
স্বামীর স্ত্রীর ঝগড়া প্রায় অল্পতে লেগে থাকে। কখনও কখনও মামলা ছাড়া তালাক পর্যন্ত গড়ায়। অনেক সময়ে ঝগড়া ঝাটির মধ্যে হত্যার মতো ঘটনা ঘটে থকে। বিগত ২০২১ সালে সিলেটে খুন হয়েছেন ৮ নারী। ২০২০ সালে স্বামীর হাতে ৪ নারী খুন হয়েছিলেন। আগের বছরের তুলনায় ২০২১ সালে দ্বিগুণ সংখ্যক নারী স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন।
তথ্য সুত্রে জানা যায়, গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের দক্ষিণ কান্দিগাঁও গ্রামের দানা মিয়া (৩৪) ও তার স্ত্রী লাকী বেগমের (২৫) মধ্যে বিয়ের পর থেকেই কলহ দেখা দেয়। ৩ মার্চ নিজ ঘরে দানা মিয়া স্ত্রী লাকী বেগমকে ধারালো ছোরা দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। হাসপাতালে নেয়ার আগেই মারা যান লাকী বেগম।
অন্য দিকে সিলেট সাজিদ উল্লাহ (৬০) ও তার স্ত্রী গেদুনি বেগম (৫৫)। এমন অবস্থার মধ্যেও দু’জনের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো। ২০২১ সালে ২০ মার্চ সাজিদ উল্লাহ শক্ত লাঠি দিয়ে স্ত্রী গেদুনি বেগমের মাথায় একাধিক আঘাত করেন। লাঠির আঘাতে ঘটনাস্থলেই গৃহবধূ গেদুনি বেগম নিহত হন।
সুনামগঞ্জের শাল্লার তরুণী সাহিমা বেগমকে (১৯) হবিগঞ্জের সুলতানশীর সিএনজি অটোরিকশা চালক মাসুম আহমদ (২৪) সামাজিক ভাবে বিয়ে করেন। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌর সভার সুরভীপাড়ায় তারা বসবাস করতেন। ২ এপ্রিল মাসুম ছোরা দিয়ে সাহিমার বুকে ও হাতে একাধিক আঘাত করে। ঘটনার পর তাৎক্ষণিক ভাবে শ্রীমঙ্গল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাহিমাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিয়ানীবাজারের শেওলা আদর্শ গ্রামের সিদ্দিক আহমেদ বিয়ে করেন গোয়াইনঘাটের বীরকুলি গ্রামের আলিমা বেগমকে। তাদের মধ্যে কলহ-বিবাদ লেগেই থাকতো। স্বামী ১২ মে রাতে পিতার বাড়িতেই আলিমাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে সিদ্দিক। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই মারা যান আলিমা বেগম।
মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল উপজেলার রামনগরে ১৯ মে রাতে গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে ডলি আক্তারকে (২৮) শ্বাসরোধ করে হত্যা করে স্বামী মসুদ মিয়া। ঝিনাইদহ জেলার বাসিন্দা ডলি আক্তারকে ঘটনার প্রায় ৮ মাস আগে বিয়ে করেন শ্রীমঙ্গলের রামনগরের মসুদ। সুদের কারবারী মসুদের সাথে একাধিক নারীর পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে ডলির সাথে মসুদের বিরোধ দেখা দিলে তাকে হত্যা করা হয়।
গোয়াইনঘাট উপজেলার বিন্নাকান্দি (বড়নগর) দক্ষিণপাড়া গ্রামে ১৬ জুন রাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হিফজুর রহমান তার স্ত্রী আলেমা বেগমকে (৩০) গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় স্ত্রীসহ ২ সন্তানকেও একই ভাবে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করে হিফজুর। আলেমা বেগম ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ঘটনার পরে ২৫ জুন আদালতে ফৌজদারি কার্য বিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকান্ডের রোমহষর্ক বর্ণনা দেয় ঘাতক হিফজুর।
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার হরিপুওে গেল বছরের ৪ জুলাই রহিমা বেগমের (২০) শরীওে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় স্বামী শিপন আহমদ। হাসপাতালৈ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জুলাই রাতে মারা যান গৃহবধূ রহিমা বেগম।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিম লাইনের সুবাস বাউসী ওরফে নুনু’র (৫০) সাথে তের বছর আগে সুচিত্রা শব্দকরের (৪০) সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর তাদের সংসারে কলহ দেখা দেয়। এর জের ধরে গেল জুইেরনর শেষ সপ্তাহে একদিন দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। নুনু কুঠার দিয়ে কুপিয়ে সুচিত্রাকে নিজ ঘরেই হত্যা করে। হত্যার পরে ঘরের সামনে মাটি খুঁড়ে সুচিত্রার লাশ চাপা দেয় ঘাতক নুনু। ঘটনার ৩৬ দিন পরে ২৮ জুলাই পুলিশ নুনুকে আটক করে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন