সু চির পদত্যাগ করা উচিত : জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের বিদায়ী প্রধান জেইদ রাদ আল-হুসেন বলেছেন, রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংস অভিযানের ব্যাপারে অজুহাত না দেখিয়ে দেশটির স্টেট কাউন্সিলর তথা রাষ্ট্রপ্রধান অং সান সুচির পদত্যাগ করা উচিত ছিল।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে জেইদ আল হুসেন এমন মন্তব্য করেছেন।

প্রসঙ্গত, রাখাইনে বার্মিজ আর্মির নৃশংসতা নিয়ে সোমবার যখন জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তখন এমন মন্তব্য করলেন মানবাধিকার কমিশনের বিদায়ী এ প্রধান।

রাদ বলেন, সহিংসতা বন্ধে কোনো উদ্যোগ না নিয়ে সুচি অজুহাত দেখানোর চেষ্টা করেছেন যা ‘খুবই দুঃখজনক’।

তিনি বলেন, ‘তিনি (সুচি) কিছু একটা করার মতো জায়গায় ছিলেন। তিনি নীরব থাকতে পারতেন, আর সবচেয়ে ভালো হতো- তিনি পদত্যাগ করতে পারতেন।’

রাদ বলেন, ‘বার্মিজ আর্মির মুখপাত্র হওয়ার কোনো প্রয়োজন তার (সুচি) ছিল না। তার এ কথাগুলোও বলার দরকার ছিল না যে, তথ্যে (রোহিঙ্গাবিরোধী সহিংসতা) রাশি রাশি ভুল রয়েছে। এসব তথ্য বানোয়াট।’

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘তিনি (সুচি) বলতে পারতেন, দেখুন, আমি নামমাত্র নেতা। আমার এসব করার ক্ষমতা নেই।’

প্রসঙ্গত, সোমাবার জেনেভায় জাতিসংঘ তদন্ত কমিশন ২০ পৃষ্ঠার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানেও ওই সহিংসতা বন্ধে সুচির ব্যর্থতার কথা বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে প্রতিবেদনে দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ও তার উপপ্রধানসহ শীর্ষ ছয় সেনা কর্মকর্তার বিচার করার সুপারিশ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে পুলিশের কয়েকটি চেকপোস্টে হামলাকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাবিরোধী বর্বর অভিযান চালায় বার্মিজ আর্মি। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মতে, ওই অভিযানে নারী ও শিশুসহ প্রায় সাত হাজার রোহিঙ্গা মারা যায়। আর জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা।

এদিকে, বুধবার নরওয়েভিত্তিক নোবেল কমিটি বলেছে, তারা সুচিকে দেওয়া নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করবে না।

কমিটির মহাসচিব ওলাভ এনজোয়েলস্টাড বলেন, নোবেল পুরস্কার, সেটা হোক পদার্থ, সাহিত্য কিংবা শান্তিতে, যেটা দেওয়া হয়েছে তা এখন অতীত।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করার কারণে সুচিকে ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। সেটা তার অতীত অর্জন।

নোবেল পুরস্কারের নিয়ম-নীতি কারও নোবেল পুরস্কার প্রত্যাহার করাকে সমর্থন করে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।