সু চি’কে রিমান্ডে নিয়েছে সামরিক সরকার
সোমবার আটক হওয়া মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সুচি এখন গৃহবন্দি। স্থানীয় সময় সোমবার সকালে দেশটির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান অং সান সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে সেনাবাহিনী।
গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সুচির এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। তারপর থেকেই মূলত দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা। প্রথম থেকেই সেনাবাহিনী নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ করে আসছে। নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ এনেই মূলত সোমবার ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে দেশজুড়ে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দা ও সমালোচনার পরও শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সুচিকে (৭৫) এখনও মুক্তি দেয়া হয়নি। এনএলডির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাজধানী নেপিদোতে সু চি এখন গৃহবন্দি। তার শারীরিক অবস্থা ভালো আছে বলে জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারে সোমবারের সেনা অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন রাস্তায় রাইফেল কাঁধে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। ইয়াঙ্গুনে দেশটির প্রধান বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মিয়ানমার টাইমস পত্রিকা জানিয়েছে, আগামী ১ জুন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক এ বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে এবং সব ধরনের ফ্লাইট ওঠানামার অনুমতি বাতিল করা হয়েছে।
সু চির একজন প্রতিবেশী তাকে তার নিজের বাসায় দেখতে পেয়েছেন। এনএলডির প্রেস অফিসার কি তো এএফপিকে বলেন, তার প্রতিবেশী একজন জানিয়েছেন, সু চি ভালো আছেন জানাতে কিছু সময় তিনি কম্পাউন্ডে হাঁটাহাঁটি করেছেন।
বড় শহরগুলোতে সৈন্যরা টহল দিচ্ছে এবং রাস্তাঘাট নীরব হয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে জারি রয়েছে রাত্রিকালীন কারফিউ। ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারও চালু হয়েছে। যদিও ইয়াঙ্গুনে অনেকেই মনে করেন, গণতন্ত্রের জন্য তাদের দীর্ঘ লড়াইয়ে হেরে গেছে।
এদিকে মিয়ানমারের ৩০ শহরের ৭০টি হাসপাতাল এবং অন্যান্য মেডিকেল বিভাগের কর্মীরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে পথে নামতে তারা সব ধরনের সেবা দেয়া বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সদ্য গঠিত মিয়ানমারের বেসামরিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বেসামরিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে এমনিতেই দেশের পরিস্থিতি ভালো নয়। সেনাবাহিনী দুর্বল জনগোষ্ঠীর ওপর নিজেদের স্বার্থ চাপিয়ে দিয়েছে। মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ১শ’র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মৃত্যুতে শীর্ষে থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম মিয়ানমার।
বিক্ষোভকারী দলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবৈধ সামরিক শাসনের কোনো নির্দেশ আমরা মেনে চলব না। বিক্ষোভে অংশ নেয়া চার চিকিৎসক নিশ্চিত করেছেন যে তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে তারা তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি।
ইয়াঙ্গুন থেকে ২৯ বছর বয়সী এক চিকিৎসক বলেন, ‘আমি চাই সেনারা তাদের নিজেদের জায়গায় ফিরে যাক। তাদের জন্যই আমরা এখন হাসপাতালে যাচ্ছি না। আমি জানি না যে কতদিন আমরা কাজ বন্ধ রাখব। এটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন