সেই রনির বিরুদ্ধে জোর করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ

চট্টগ্রামে ইউনিএইড কোচিং সেন্টারের মালিককের কাছে ‘২০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে’ মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর মহানগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনিকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ওই ঘটনার তিনমাস পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক এ সাধারণ সম্পাদকের ফেসবুকে প্রকাশিত ভিডিওতে কোচিং মালিক রাশেদ বলছেন, ‘রনি আমার পার্টনার ছিল, সে আমাকে ব্যবসার জন্য সাড়ে ৯ লাখ টাকা ক্যাশ দিয়েছে।’ তবে কোচিং সেন্টারের মালিক রাশেদ সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন, ‘ভয় দেখিয়ে ও চাপ প্রয়োগ করে এ স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে জোর করে একশ’ টাকার তিনটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে।’

বুধবার (১১ জুলাই) বিকেলে নুরুল আজিম রনির ফেসবুকে তিনটি আলাদা আলাদা মোট চার মিনিটের ভিডিও প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত তিনটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইউনিএইড কোচিং সেন্টারের মালিক রাশেদ মিয়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তিন নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কফিল উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলছেন। এ সময় টাকা নেয়া কথা স্বীকার করেন রাশেদ।

১ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে রাশেদ বলছেন, ‘পার্টনার ছিল রনি।’ পাশ থেকে কেউ একজন তাকে জিজ্ঞেসা করছেন, ‘কয় লাখ টাকা?’ উত্তরে রাশেদ বলেন, ‘৯ লাখ টাকা।’ পাশের ব্যক্তি আবারও প্রশ্ন করেন, ‘চেক নাকি ক্যাশ দিয়েছিল?’ উত্তরে রাশেদ বলেন, ‘ক্যাশ দিয়েছে, রনিই দিয়েছে।’

দু’জনের কথোপকথনের মাঝখানে পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন জানতে চান, ‘ও (রনি) আপনার সাথে কোনো ডকুমেন্টস করে নাই?’ উত্তরে রাশেদ বলেন, ‘না, ও আমাকে বিশ্বাস করেছে।’

এদিকে প্রকাশিত ভিডিও সম্পর্কে রাশেদ মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটি জোর করে নেয়া স্বীকারোক্তি। রনির ছেলেরা আমাকে ও আমার এক ছাত্রকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে এসব কথা বলতে বাধ্য করেছে।’

রাশেদ আরও বলেন, ‘গত মঙ্গলবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় নগরের বায়েজিদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এলাকা থেকে রনির কয়েকজন ছেলে মোটরসাইকেলে আমাকে ও এক ছাত্রকে তুলে নেয়। পরে তাদের পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কফিল উদ্দিনের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় ভয় দেখিয়ে, চাপ প্রয়োগ করে স্বীকারোক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের কথা সংবলিত ১শ’ টাকার তিনটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন বলেন, ‘রাশেদ মিয়া নিজেই রনির সঙ্গে সমঝোতার জন্য আমার কাছে এসেছিলেন। রাশেদ জানান, রনি তার ব্যবসায়িক পার্টনার ছিল। ২০১৭ সালে রনি তাকে সাড়ে ৯ লাখ টাকা ক্যাশ দেন। ব্যবসা খারাপ থাকায় রাশেদ সে টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। রনির বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার এবং তার সাড়ে ৯ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারেও সম্মত হয়েছেন।’

রাশেদের অভিযোগ সম্পর্কে নুরুল আজিম রনি বলেন, ‘এখানে আমার কোনো কথা নেই। একজন জনপ্রতিনিধির সামনেই রাশেদ তার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এখন নাকি তিনি বলছেন, জোর করে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে। আসলে সে একটা টাউট টাইপের মানুষ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ফ্যাক্টরি বিক্রির ১০ লাখ টাকা দুই চেকে রাশেদকে দেই। পরে তিনি চেক না নেওয়ায় আমার বন্ধু মাসুদ নিজে চেক ভেঙে ৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকা রাশেদের হাতে তুলে দেয়।’