স্কুলে স্কুলে চলছে বই উৎসব

নতুন বছরের প্রথম দিনেই সারা দেশে একযোগে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণির চার কোটি শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে ঝকঝকে তকতকে নতুন পাঠ্যবই।

এ উপলক্ষে দিনটিকে ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ হিসেবে পালন করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

অবশ্য গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে শিশুদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে এবারের পাঠ্যপুস্তক উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

সোমবার সারা দেশে উৎসবটি উদযাপিত হচ্ছে। এর মধ্যে রাজধানীর আজিমপুর সরকারি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে আয়োজন করা হয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় উৎসব। এতে প্রধান অতিথি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। উভয় অনুষ্ঠানই শুরু হয়েছে সকাল ১০টায়।

শুধু রাজধানীতেই নয়, সারা দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উৎসবের মাধ্যমে শিশুদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হচ্ছে। স্কুলে স্কুলে পুরোদমে উৎসব চলছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এবারের উৎসবের বিশেষত্ব হল- দ্বিতীয়বারের মতো প্রাক-প্রাথমিকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুদের মাতৃভাষার বই প্রদান। এ ছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের ব্রেইল বই দেয়া হচ্ছে।

এবার সারা দেশে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হচ্ছে। এ জন্য ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ১৬২টি পাঠ্যপুস্তক ছাপানো হয়।

যদিও রোববার পর্যন্ত বাফার স্টকের ৫ শতাংশসহ অন্তত ১০ শতাংশ বই বিতরণের জন্য মাঠপর্যায়ে সরবরাহ সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে নবম শ্রেণির বাংলা-ইংরেজিসহ সুখপাঠ্যের ১২টি বইয়ের সংখ্যাই বেশি। একটি সূত্র জানিয়েছে, সুখপাঠ্যের মোট বইয়ের প্রায় ৩৫ শতাংশ এখনও পাঠানো সম্ভব হয়নি।

পাঠ্যবই মুদ্রণ ও সরবরাহের কাজ করছে সরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এনসিটিবির এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলা, ইংরেজি, পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞানসহ ১২টি বই সুখপাঠ্য হিসেবে সহজ করে রচনার পর চার রঙে ছাপানো হয়েছে। এসব বইয়ের মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি বাদে অন্যগুলো বছরের প্রথম ২-৩ মাস প্রয়োজন পড়ে না। এ কারণে কম গুরুত্বপূর্ণ বই সরবরাহের ব্যাপারে কিছুটা ছাড় দেয়া হয়েছে। তবে এ সংখ্যা বেশি নয়।

এদিকে বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে, এবার সরবরাহ করা বইয়ের মধ্যে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের বই ছাপিয়ে সরবরাহ করেছে। নিম্নমানের বইয়ের কাগজ, রঙ ও বাঁধাইয়ের মান নিয়ে এনসিটিবির পরিদর্শন সংস্থাগুলোই আপত্তি দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘সব বই ছাপানো শেষ হয়েছে। বই বিতরণে কোনো সমস্যা হবে না।’