স্ত্রীকে কেটে ৭০ টুকরো করে লিথিনের প্যাকেটে ভরে ডিপ ফ্রিজে!
ভারতে স্ত্রীকে খুন করার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার রাজেশ গুলাটির। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ৭ বছর আগে রাজেশ তাঁর স্ত্রী অনুপমাকে খুন করে তাঁর দেহ ৭০টি টুকরো করে সেগুলি একটি পলিথিনের প্যাকেটে ভরে ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখেছিলেন।
দোষী সাব্যস্ত রাজেশকে ভারতে দেহরাদুন আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও সেশন জজ বিনোদ কুমার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ১৫ লক্ষ টাকার জরিমানা ধার্য করেছেন। রাজেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও ২০১ নম্বর ধারায় মামলা রুজু হয়েছিল। উত্তরাখণ্ডের এই ঘটনাটি দেশ জুড়ে আলোড়ন তুলেছিল।
পুলিশ জানাচ্ছে, ২০১০ সালের ১৭ অক্টোবরের ঘটনা। স্ত্রী অনুপমার সঙ্গে তুমুল বাদানুবাদের জেরে ওই দিন দেহরাদুনের প্রকাশ নগর এলাকায় তাঁর ভাড়া বাড়িতে স্ত্রীকে খুন করেন ৩৭ বছর বয়সী রাজেশ, অনুপমার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে। তার পর বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে স্ত্রীর দেহটি কেটে টুকরো টুকরো করেন তিনি। আর সেই টুকরোগুলি একটি পলিথিনের প্যাকেটে ভরে ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখেন।
পুলিশের বক্তব্য, কলকাতার এক মহিলার সঙ্গে রাজেশ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ছিলেন বলে সন্দেহ করতেন স্ত্রী অনুপমা। তা নিয়ে প্রায়শই রাজেশের সঙ্গে তুমুল বচসা হত অনুপমার।
ঘটনার দিনও তেমন বচসা হয়েছিল দু’জনের।
যদিও আদালতে শুনানিতে রাজেশ জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী অনুপমাই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন আমেরিকা নিবাসী এক জনের সঙ্গে। সে জন্যই রাগে অন্ধ হয়ে গিয়ে রাজেশ খুন করেছিলেন অনুপমাকে। অনুপমার দু’টি যমজ সন্তান রয়েছে। তখন তাদের বয়স ছিল ৪ বছর। মা দিল্লিতে রয়েছে বলে তাদেরও রাজেশ মিথ্যে বলেছিলেন।
পরে অবশ্য শুনানিতে রাজেশ কবুল করেছিলেন, আমেরিকা থেকে ফিরে তিনিই কলকাতার এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন।
গোটা ঘটনাটাই গোপন ছিল প্রায় মাসদু’য়েক। তার পর ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বোনের কোনও খোঁজখবর না পেয়ে দেহরাদুনে রাজেশের বাড়িতে এসেছিলেন অনুপমার ভাই সুজন প্রধান। কিন্তু অনুপমা কোথায় আছেন, তা রাজেশ সে দিন জানাতে পারেননি সুজনকে। বাড়িতে ঢুকতেও দেননি অনুপমার ভাইকে। তাতে সন্দেহ হওয়ায় নিখোঁজ বোনের জন্য পুলিশকে জানিয়েছিলেন অনুপমার ভাই।
তার পরেই ক্যান্টনমেন্ট থানার পুলিশ রাজেশের বাড়ি গিয়ে ডিপ ফ্রিজ থেকে ওই পলিথিনের প্যাকেট উদ্ধার করে। পুলিশ পরে তদন্ত করতে গিয়ে দেখে মিসৌরি রোডে একটি ড্রেনে অনুপমার দেহের কয়েকটি টুকরো পড়ে রয়েছে। তদন্তে রাজেশ কবুল করেন, তিনিই ওই টুকরোগুলি ফেলেছিলেন ড্রেনে। ধরা পড়ে যাওয়ার পর রাজেশ বলেছিলেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের জন্যই তিনি স্ত্রীকে খুন করেছিলেন। ’’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন