স্থলবন্দর বেনাপোলে ৫ কোটি টাকার কন্টেইনার স্ক্যানিং মেশিন ৩ মাস ধরে অকেজো
দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোলে ৫ কোটি টাকার কন্টেইনার স্ক্যানিং মেশিন গত ৩ মাস ধরে অকেজো। এতে করে আমদানী করা পণ্যবোঝাই ট্রাকের স্ক্যানিং বন্ধ রয়েছে। ফলে ট্রাকের মধ্যে আমদানী নিষিদ্ধ পণ্য আছে কি না তা শনাক্ত করা যাচ্ছে না। মেশিনটি নষ্ট হওয়ার পর থেকে ঝুঁকি নিয়ে আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রম পরিচালনা করছে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।
এ অবস্থায় কেউ যাতে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পণ্য না আনতে পারে সেজন্য দ্রুত কন্টেইনার স্ক্যানিং মেশিন মেরামতের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিন ঘুরে ও বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ২০২০ সালের এপ্রিলে চীনের সরকার ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বেনাপোলে স্থলবন্দরে এই কন্টেইনার স্ক্যানিং মেশিন স্থাপন করে। স্থাপনের পর একজন চীনা ইঞ্জিনিয়ার ৩ মাস ধরে কাস্টমস অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেন। বেশ কিছু দিন চলার পর গত ২০২৩ সালের নভেম্বরে এটি নষ্ট হয়ে যায়। এরপর থেকে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মেশিনটি মেরামতের জন্য একাধিকবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দেয়। তবে আবেদনে এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার পণ্য দ্রুত খালাশের জন্য কন্টেইনার স্ক্যানিং মেশিনটি বসিয়েছে। মেশিনটি ট্রাকের পণ্যগুলো ছবি আকারে স্ক্যানিং করে কম্পিউটারে ধারণ করে রাখে। কোনো অনিয়ম দেখলেই স্ক্যানিং মেশিন রেড সিগনাল দেবে। যে সব পণ্যের স্ক্যানিং সম্পন্ন হবে সেগুলো পুনরায় পরীক্ষা করা দরকার হয় না।
অত্যাধুনিক মেশিনটি আমদানী করা পণ্যবাহী ট্রাকে আসা রাসায়নিক, মাদক, অস্ত্র ও মিথ্যা ঘোষণার পণ্য শনাক্ত করতে সক্ষম। চায়না ইঞ্জিনিয়ার চলে যাওয়ার পর মেশিনটি পরিচালনা দায়িত্ব পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ফাইবার এসোসিয়েটস। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, স্ক্যানিং মেশিন মেরামত করতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন, ‘দ্রুত এই স্ক্যানিং মেশিন সচল করা দরকার, যাতে কেউ আমদানী নিষিদ্ধ পণ্য বাংলাদেশে আনতে না পারে। কেউ যেন অবৈধভাবে ব্যবসা করতে না পারেন। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে।’
এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কন্টেইনার স্ক্যানিং মেশিনটি মেরামতের জন্য একাধিকবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দিয়েছি। আশা করি যতদ্রুত সম্ভব এটি মেরামত করা সম্ভব হবে।’
এদিকে বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে একটি অত্যাধুনিক স্ক্যানার মেশিন বসানো আছে। যা প্রত্যেকদিন ভারত থেকে ৪ থেকে ৫ হাজার যাত্রী আশে প্রত্যেকটা যাত্রী ব্যাগ পরীক্ষা করা হয়। একইসঙ্গে গতকাল শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ৩ যাত্রীদের স্ক্যানিং করার মেশিন বসিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এর মাধ্যমে ব্যাগের পাশাপাশি ভারতে যাওয়া-আসা করা যাত্রীদেরও পরীক্ষা করছেন বিজিবি সদস্যরা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন