স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যে ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরলেন শ্রীলঙ্কার চিকিৎসকরা

লোডশেডিং, জীবন রক্ষাকারী ওষুধের সঙ্কটে ভয়াবহ পরিস্থিতি ধেয়ে আসছে বলেই সতর্ক বার্তা দিয়েছে শ্রীলঙ্কার চিকিৎিসকরা। তারা বলেছেন, শ্রীলঙ্কা যে বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়ানো তাতে বহু মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মারা যেতে পারেন।

হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ নেই, নবজাতক শিশুদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সহায়তায় ব্যবহার করা টিউব নেই। এছাড়াও লোডশেডিংয়ের কারণে চিকিৎসকরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের আহতবস্থায় জরুরি চিকিৎসা দিতে পারছেন না।

এমনকি সাপে কামড়ানো মানুষদের চিকিৎসা সেবাও লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যাহত হচ্ছে।

পরিস্থিতি অতি মাত্রায় খারাপের দিকে যাওয়ায় অনেক হাসপাতালে নিয়মিত অস্ত্রোপচারও বন্ধ রাখা হয়েছে। ল্যাবরেটরি টেস্টের পরিমাণও অনেকটা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঠিক এই পরিস্থিতিতে সামনের ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পেরে অনেক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা রাস্তায় নেমে এসেছেন, আন্দোলন করছেন।

সরকারি মেডিকেল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সেনাল ফের্নান্দো বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার সব হাসপাতালই খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে। আগামী দুই সপ্তাহে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। যদি ব্যবস্থা নেওয়া না হয় মানুষ বিনা চিকিৎসায় মরতে শুরু করবে। ’

ওষুধের অভাবে কোনও রোগি মারা গেলে তা ‘হাসপাতালে দাঙ্গা’র মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।

তার অভিযোগ, শ্রীলঙ্কা সরকার সঙ্কট মোকাবেলায় স্বচ্ছতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সরকার উদাসীন, তারা মানুষকে কিছুই বলছে না। ’
চিকিৎসকদের দাবি, ওষুধ স্বল্পতা আর লোডশেডিং দুঃস্বপ্নের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। অনেক চিকিৎসক জানিয়েছেন টর্চ লাইটের আলোতেও তাদের রোগিদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। তারা বলেছেন, সাপে কাটার মতো গুরুতর অবস্থায় থাকা রোগিদের চিকিৎসা টর্চ লাইটের আলোয় করা মোটেও সহজ নয়।

এ বিষয়ে শ্রীলঙ্কার অ্যাসোসিয়েশন অব মেডিকেল স্পেশালিস্ট-এর প্রেসিডেন্ট লাক্কুমার ফের্নান্দো বলেন, ‘আপনি হার্ট অ্যাটাক নিয়ে হাসপাতালে গেলে এখন আপনার মৃত্যুর আশঙ্কা আগের মাসগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। সব হাসপাতালেই ভয়াবহ অবস্থা। ’

শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও গত সপ্তাহে জানিয়েছিল ৪০টির বেশি জরুরি ওষুধের ঘাটতি আছে দেশটিতে। এছাড়াও আরও ১৪০টি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের মজুদও শেষের দিকে।

সূত্র: আল জাজিরা