হার না মানা বাইডেন হোয়াইট হাউজে

শৈশবে তোতলামির কারণে সহপাঠী ও বন্ধুদের হাসির পাত্র হওয়া, ব্যক্তিগত জীবনে ভয়াবহ ট্র্যাজেডি, প্রথমবার হোয়াইট হাউজে পৌঁছানোর দৌড়ে নেমে বক্তৃতা চুরির দায় মাথায় নিয়ে সরে দাঁড়ানো কিংবা প্রার্থী হওয়ার লড়াইয়ে নেমে ব্যর্থ হওয়া। এসবের কোনটিই যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের লক্ষ্যপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।

হার না মানার মানসিকতা আর নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অদম্য চেষ্টতেই শেষ পর্যন্ত হোয়াইট হাউজে যাওয়ার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ করলেন তিনি।

বাইডেনের প্রথম স্ত্রী নেইলিয়া তাদের বিয়ের আগে ১৯৬৪ সালে তার এক বান্ধবীকে হবু বরের প্রশংসা করতে গিয়ে বলছিলেন, ‘‘৩০ বছর বয়সের মধ্যেই সে (বাইডেন) সেনেটর হতে যাচ্ছে এবং একদিন সে যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিডেন্ট হবে।”

১৯৭২ সালে ২৯ বছর বয়সে ডেলওয়ারের সেনেটর নির্বাচিত হয়ে সেই কথা রাখেন বাইডেন। ১৯৮৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য তিনি প্রথমবার প্রার্থী মনোনয়নের দৌড়ে নামার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ১৯৮৭ সালের ৯ জুন ওই ঘোষণার পর প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলে তিনি তরতর করে এগিয়েও যাচ্ছিলেন। কিন্তু তিন মাসের মাথায় বক্তৃতা চুরি করার কেলেঙ্কারি স্বীকার করে তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন।

তারপর ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী হওয়ার মনোনয়নের দৌড়ে নেমেছিলেন বাইডেন। কিন্তু সেবার বারাক ওবামার কাছে হেরে যান। পরে তিনি ওবামার রানিংমেট হন এবং তার আমলে আট বছর ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।

ওবামা যুক্তরাষ্ট্রের সেরা ভাইস- প্রেসিডেন্টের তকমা দিয়েছিলেন বাইডেনকে। এবার ৭৭ বছর বয়সে এসে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন।

বাইডেনই এখন হবেন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বয়স্ক প্রসিডেন্ট। তবে বয়সের কারণে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে তিনি শারীরিকভাবে দুই মেয়াদে ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকতে সক্ষম হবেন কিনা। তাছাড়া, করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে তার সামনে আছে নানা অনিশ্চয়তা এবং চ্যালেঞ্জও।

বাইডেনের প্রথম ১০০ দিনের চ্যালেঞ্জ:
হোয়াইট হাউজে যাওয়ার পর প্রথম ১০০ দিনে জো বাইডেনকে সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে সেটা নিশ্চিতভাবেই করোনাভাইরাস। দেশটিতে শনিবার পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৯৭ লাখ ৪০ হাজার ৭৩ জন। সেখানে গত তিনদিন ধরে আবারও দৈনিক এক লাখের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের দায়িত্ব নিতে এখনও বাকি বেশকিছুদিন। ততদিনে এ সংখ্যা আরও কয়েক লাখ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে শনিবার পর্যন্ত মারা গেছেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯৯ জন। এ মহামারী নিয়ন্ত্রণে চরম ব্যর্থতার জেরে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আমেরিকানরা আস্থা হারান। এই আস্থাহীনতার জেরেই হয়ত হার দেখতে হল ট্রাম্পকে।

জনগণের মনে সরকার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব এখন বাইডেনের কাঁধে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ মহামারীর যে ধাক্কা লেগেছে সেটাও তাকে সামাল দিতে হবে। মহামারীর কারণে দেশটির দুই কোটি মানুষ কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থা থেকে দেশকে উদ্ধারে বাইডেনকে ঐতিহাসিক কিছু করতে হবে বলে মনে করেন ডেমোক্র্যাটিক কর্মী সৈকত চক্রবর্তী।

ট্রাম্পকে ছাপিয়ে ভোটারদের পছন্দের প্রার্থী ‘লড়াকু’ জো বাইডেন

তিনি বলেন, ‘‘তার হাতে মহামারী এবং মন্দা মোকাবেলার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। তাকে মূলত এসব সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে বের করতেই বেছে নেওয়া হয়েছে। তাই এখন তাকে বড় কিছু করতে হবে।”

সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে উপ শ্রমমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা ক্রিস লিউ বলেন, ‘‘এখনকার পরিস্থিতি অনেকটা ২০০৯ সালের মত। সেবার মহামন্দার মধ্যে আমরা ক্ষমতায় গ্রহণ করেছিলাম। এখন যে অবস্থা চলছে সেটাকে মন্দা বলা যায় এবং এবার তার সঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে আরও অনেক বেশি কঠিন একটি চ্যালেঞ্জ যোগ হয়েছে।”

যুক্তরাষ্ট্রে এখন মহামারীর যে গতি তার উপর ভিত্তি করে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এ রোগ সাড়ে তিন লাখের বেশি আমেরিকানের প্রাণ কেড়ে নেবে বলে অনুমান করা হয়েছে।

নির্বাচনী প্রচারের সময়ই বাইডেন শিবির মহামারী নিয়ন্ত্রণে একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক পরিকল্পনা দিয়েছেন। ওই পরিকল্পনার অন্যতম হলো মস্কা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা, রোগ শনাক্তে পরীক্ষা আওতা অনেক বাড়ানো, আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা মানুষদের খুঁজে বের করা এবং কোভিড-১৯ চিকিৎসা করাতে গিয়ে বড় ধরনের মেডিকেল বিল পরিশোধের বোঝা থেকে সাধারণ মানুষকে উদ্ধার করা।

প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে বাইডেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আরও যে কাজটি করবেন সেটা সম্ভবত প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে পুনরায় যোগ দেওয়া। বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ‘আজগুবি’ উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেনে। ভোটের এক দিন পর গত ৪ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ওই চুক্তি থেকে বের হয়ে যায়।

বাইডেন ইরান পরমাণু চুক্তিতেও ফিরে যাওয়ার কথা নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছেন। তিনি বারাক ওবামার আমলে করা স্বাস্থ্যবীমা ‘অ্যাফোরডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’র আওতাও বাড়াবেন। ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্টের দ্বায়িত্ব পালন করা বাইডেন ওই চুক্তির পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই স্বাস্থ্যবীমার আওতা আরও বাড়াতে চান বাইডেন। তিনি ৯৭% আমেরিকানকে এই বীমার আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছেন।

বিশ্ব নেতৃত্বে যুক্তরাষ্টের অবস্থান পোক্ত করা:
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে বিশ্ব নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের যে ধস নেমেছে তা মেরামতেরও কঠিন চ্যালেঞ্ঝ আছে জো বাইডেনের সামনে।

ট্রাম্প গত চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু দেশগুলোর সঙ্গে শত্রুতা যেমন বাড়িয়েছেন। তেমন মিত্র দেশ এবং সংস্থাকে অপমান করতে ছাড়েনি। বাইডেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেসব কাজ করবেন বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছেন তার একটি হচ্ছে মিত্রদের সঙ্গে পুনরায় সুসম্পর্ক স্থাপন। বিশেষ করে নেটোর সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার।

করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ে সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য প্রদাণে অক্ষমতার নানা অভিযোগ তুলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায়-ডব্লিউএইচও তহবিল প্রদাণ বন্ধ করে দিয়েছেন ট্রাম্প। বাইডেন ডব্লিউএইচওতে পুনরায় যুক্ত হয়ে করোনভাইরাস মোকাবেলায় বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ফিরবেন প্যারিস জলবায়ু ও ইরান পরমাণু চুক্তিতেও। ট্রাম্প ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়ে দেশটির উপর নতুন করে নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। যদিও ইরান পরমাণু চুক্তির বাকি অংশীদাররা চুক্তিতে রয়ে গেছেন এবং ইরানকে বুঝিয়ে চুক্তি মেনে চলতে রাজি করাতে চাইছেন।

ইরানের বিষয়ে বাইডেন বলেছেন, ট্রাম্প পরমাণু অস্ত্র তৈরি আটকাতে দেশটির উপর ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের’ যে নীতি গ্রহণ করেছিলেন তা ব্যর্থ হয়েছে। বরং দেশটির সঙ্গে উত্তেজনা আরও বেড়েছে এবং ট্রাম্প যখন ক্ষমতায় আসেন সেই তুলনায় ইরান এখন পরমাণু অস্ত্রের অনেক কাছে পৌঁছে গিয়েছে বলেও মত বাইডেনের।

বাইডেন বলেছেন, ইরান যদি ২০১৫ সালে করা পরমাণু চুক্তি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে রাজি হয়, তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তিতে ফেরাবেন। কিন্তু তিনি এখনই দেশটির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলবেন না।

প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরার পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে তা পূরণে ২ ট্রিলয়ন মার্কিন ডলারের উ‌চ্চাভিলাষি পরিকল্পনাও কথাও জানিয়েছেন তিনি।

মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ ইয়েমেন নিয়েও নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন বাইডেন। তিনি বলেছেন, ওই যুদ্ধে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোটে তিনি থাকবেন না। কারণ, ইয়েমেনে যেভাবে গণহারে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে তাতে এরকম একটি যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ নিয়ে দলে এবং কংগ্রেসে বিরোধিতা ও আপত্তি বাড়ছে।

সৌদি আরবের বাদশাহ, যুবরাজসহ রাজপরিবারের সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতা ছিল। বিশেষ করে ইরান বিরোধী নানা ইস্যুতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইডেন হয়ত ট্রাম্পের ওই অবস্থান থেকে পিছিয়ে আসবেন।

আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউটের ড্যানিয়েল প্লেটকা বলেন, ‘‘আমার যতদূর মনে হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। তবে সেটা অবশ্যই হয় আরো বেশি ইরানপন্থি নতুবা আরও কম সৌদি আরবপন্থি হবে।”

বাইডেন অবশ্য আরব-ইসরায়েল বিরোধ নিষ্পত্তিতে ট্রাম্পের উদ্যোগে ইসরায়েল-সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে হওয়া চু্ক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। অন্যান্য ডেমোক্র্যাটিক নেতাদের মত বাইডেনও ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং একনিষ্ঠ সমর্থক। তাই প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি ইসরায়েলের স্বার্থ সুরক্ষায় কাজ করবেন বলেই ধরে নেওয়া যায়।

চীন এবং রাশিয়া প্রসঙ্গে বাইডেন এখনও তার অবস্থান পরিষ্কার করেননি। তিনি বলেছেন, চীনের উপর এক তরফা শুল্কারোপ তিনি করবেন না। তবে অন্যান্য শক্তির সঙ্গে মিলে যৌথ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, যেন চীন তা মানতে বাধ্য হয়।

পরমাণু অস্ত্র মুক্ত বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক পরমাণু অস্ত্র চুক্তির মেয়াদ বাড়নোর আগ্রহও প্রকাশ করেছেন বাইডেন।

দীর্ঘ আট বছর সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করা বাইডেন কয়েক দশক ধরে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থার কেন্দ্রে অবস্থান করায় বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ে তার ধারণা খুব স্পষ্ট। রাজনীতিতে ওবামার অনভিজ্ঞতা খুব সহজেই পূরণ করেছিলেন বাইডেন।

ওবামার আমলে গ্রহণ করা নানা নীতিতে বাইডেনের প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। তাই বলাই যায়, এবার বাইডেন যখন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তখন ওবামার আমলের বৈদেশিক নীতিতেই তিনি হাঁটবেন।

দুঃসময় থেকে ঘুরে দাঁড়ানো নেতা বাইডেন
বাইডেনের জীবনে সাফল্য যেমন এসেছে, তার সঙ্গে পাল্টা দিয়ে এসেছে ট্র্যাজেডি। ১৯৭২ সালে মাত্র ২৯ বছর বয়সে তিনি ডেলাওয়ার সেনেট নির্বাচিত হন। কিন্তু ওই বছর ডিসেম্বরে শপথ নেওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগে গাড়ি দুর্ঘটনায় স্ত্রী নেইলিয়া ও শিশুকন্যা নাওমিকে হারান। গাড়িতে থাকা তার দুই ছেলে বোও এবং হান্টার গুরুতর আহত হন।

বোওর পা ভেঙে গিয়েছিল। ছেলের হাসপাতাল কক্ষে দাঁড়িয়ে সেনেটর হিসেবে শপথ নেন বাইডেন। নিজের আত্মজীবনীতে স্ত্রী ও কন্যার মৃত্যুর শোক এবং এক দুই ছেলেকে সামলাতে গিয়ে দিশেহারা বাইডেন রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে যাজক হওয়ার পরিকল্পনাও করেছিলেন।

২০১৫ সালে আবারও সন্তানের মৃত্যুর শোক সইতে হয় বাইডেনকে। ওই বছর তার বড় ছেলে বোও মস্তিষ্কের ক্যান্সারে ভুগে মারা যান। ৪৬ বছরের বোও ডেলাওয়ারের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের উঠতি রাজনীতিকদের একজন বোওর ২০১৬ সালে ডেলওয়ার অঙ্গরাজ্যের গভর্নর নির্বাচন করার কথা ছিল। বোও কে তার বাবার রাজনৈতিক উত্তসূরী ভাবা হত।

বোওর মৃত্যুতে আবারও ভেঙে পড়েন বাইডেন। আত্মজীবনীতে এ প্রসঙ্গে বাইডেন লিখেছেন, ওই বছর তিনি ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীতা ঘোষণার তোড়জোড় করছিলেন। কিন্তু ছেলের মৃত্যুর পর তিনি সিদ্ধান্ত বদলান।

বাইডেনের দীর্ঘদিনের চিফ অব স্টাফ এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু টেড কাউফম্যান বলেন, ‘‘তার জীবনে যা ঘটেছে তাতে সারা জীবনে আমার দেখা সবচেয়ে সৌভাগ্যবান মানুষ তিনি। একই সঙ্গে তিনি আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে দুর্ভাগা মানুষও বটে।

‘‘তার জীবনের যে অবিশ্বাস্য উত্থান-পতন তেমন আমি আর কারও জীবনে দেখিনি। এই মুহূর্তে আমাদের দেশের যে অবস্থা তাতে তিনিই যে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি তার একটি কারণ এটাও বটে। তিনি সবচেয়ে দুঃসময় থেকেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেন।”