১৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রেনের টিকিট
ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয় সকাল আটটায়। কিন্তু লাইন? তো তো আগের সন্ধ্যার ব্যাপার। ভোর হতে হতে লাইন কাউন্টারের সামনের ফাঁকা জায়গা ছাড়িয়ে নিচের সড়ক অব্দি শেষ হয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাফী লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন মঙ্গলবার রাত নয়টায়। টিকিট হাতে পেয়েছেন পরদিন সকাল ১০টায়। ১৩ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আর বসে মশার কামড় খেয়ে নির্ঘুম রাত পার করার পর তার প্রতিক্রিয়া এমন, ‘টিকিট পেয়ে ভীষণ হ্যাপি। অনেক ভালো লাগছে টিকিট পেয়ে, এখন নিশ্চিন্তে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা যাবে।’
যারা সাফীর মত অত আগে স্টেশনে যাননি, তাদের কী হাল হয়েছে? পাবনা যাবেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, টিকিট নিতে সেহরি খাওয়ার পরেই এসে দাঁড়িয়েছি, এসে দেখি অনেক লোক ৪০১ নং সিরিয়ালে এসে দাঁড়িয়েছি।
একেকজনকে টিকিট দেয়া হয় সর্বোচ্চ চারটি করে। তবে সবাই যে চারটি নিচ্ছেন, সেটা নিশ্চিত নয়। তাই টিকিট পাওয়ার আশায় আছেন আমিরুল
আমিরুল বলেন, ‘পরিবার পরিজন নিয়ে দেশে যাব ঈদ করতে। ঈদে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখঅ হবে, তাদের ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য এত কষ্ট করে টিকিট কাটতে আসছি। তবে টিকিট পেলে এই কষ্টের কথা মনে থাকবে না।’
আগাম টিকিট বিক্রির তৃতীয় দিনে বুধবার দেওয়া হচ্ছে ২৩ জুনের ৩১টি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট। একই সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে সাতজোড়া স্পেশাল ট্রেনের টিকিট। তৃতীয় দিনে ভিড় আগের দুই দিনের চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে।
লাইনে দাড়িয়েছেন টিকিট প্রত্যঅশী সোহেল রানা। তিনি রাজশাহীর ট্রেনের টিকিট নিবেন। তিনি বলেন, ‘আজ প্রচুর পরিমানে ভিড়, কষ্ট হচ্ছে অনেক। টিকিট পেলে অনেক ভালো লাগবে।’
গতকাল থেকে দেয়া হয়েছিল রাজশাহী ও পার্বতীপুরগামী স্পেশাল ট্রেনের টিকিট। এখন থেকে দেওয়া শুরু হচ্ছে দিনাজপুরের স্পেশাল ট্রেনের টিকিট। সব মিলিয়ে আজ সারাদিন টিকিট বিক্রি হবে প্রায় সাড়ে ২৪ হাজার।
এই টিকিটে ৬৫ শতাংশ কাউন্টার থেকে দেয়া হবে, আর বাকি ২৫ ভাগ অনলাইন ও মোবাইলের মাধ্যমে, ৫ ভাগ দেয়া হবে ভিআইপিদের জন্য ও ৫ ভাগ রেল কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য সংরক্ষিত।
আন্তঃনগর ট্রেনের জন্য ২২ হাজারসহ মেইল-লোকাল মিলিয়ে প্রতিদিন প্রাং ৫৫ হাজার টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে। বছরে অন্য সময় দিনে ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টিকিট বিক্রি হয়।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘সিতাংশু বলেন, প্রথম দিন টিকিটের তেমন ভিড় না থাকলেও গতকাল রাজশাহী, খুলনার টিকিটের চাহিদা ছিল প্রচুর। তৃতীয় দিনে উত্তর বঙ্গের টিকিটের চাহিদা অনেক রয়েছে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন