বৃষ্টি আরও ভোগাবে বাংলাদেশকে

আবহাওয়া অধিদপ্তরের রেকর্ড মতে গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টির হয়েছে সোমবার। ২০০৭ সালের ১১ জুন ১৫১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। আর ১২ জুন বৃষ্টি হয় ১৩৯ মিলিমিটার।

আবার সোমবার রাতের অতি বৃষ্টিতে পাহাড়ধসে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে অন্তত ৯২ জনের মৃত্যু ঘটে।

এর আগে গত এপ্রিলে দেশে বৃষ্টি হয়েছে ৩৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এই মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫,২৮৬ মিলিমিটার। কিন্তু হয়েছে ৭৬ শতাংশ বেশি। এই মাসে একবারই এর চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছিল, সেটা ১৯৮১ সালে।

মাঝে মে মাসে বৃষ্টিপাত ছিল অনেকটা স্বাভাবিক, বরং স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য কম। কিন্তু ‘এই সামান্য কম বৃষ্টি’ যেন জুনে আবার পুষিয়ে নিচ্ছে প্রকৃতি।

চলতি বছর এত বৃষ্টি কেন? আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এপ্রিলে কালবৈশাখী ঝড় স্বাভাবিক চিত্র হলেও এবার বৃষ্টি হচ্ছে মুষলধারে, যা সাধারণত বর্ষাকালে দেখা যায়। অনেক বছর পর এ ধরনের ভারী বর্ষণকে ‘ক্লাইমেট ভ্যারিয়েবিলি’বলছেন আবহাওয়াবিদরা। বঙ্গোপসাগরে উচ্চচাপ বলয় বেশি দুর্বল থাকায় পুবালি ও পশ্চিমা লঘুচাপের সক্রিয়তাকে অতি বর্ষণের কারণ দেখছেন তারা।

১২ জুন ঢাকায় ১৩৯ মিলিমিটার ছাড়াও ৩১ মে চট্টগ্রামে ১৭৭ মিলিমিটার, সীতাকুন্ডে ১৩৮ বৃষ্টি, রাঙ্গামাটি ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস সঙ্গে। তিনি বলেন, পশ্চিমা ও পুবালি লঘুচাপের সংমিশ্রণের ফলে জ্বলীয়বাষ্প বেশি সৃষ্টি হওয়ায় এবার বৃষ্টি বেশি হয়েছে। এই অবস্থা অবশ্য কয়েক বছর পর পরই হয়। ধারাবাহিক ভাবে বৃষ্টি কোন বছরে একটু বেশি বৃষ্টি হয়, কোন বছর একটু কম বৃষ্টি হয়।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদের বলেন, ‘গত বছর এল নিনোর প্রভাব ছিল আমাদের দেশে, সেটা জুন জুলাইয়ে ডিসলভ হয়ে যায়। গত এপ্রিল মাসে সেটা ট্রানজিকশন প্রিয়ড ছিল। ফলে পুবালী বায়ু ছিল শক্তিশালী, সেটা পশ্চিমা লঘুচাপে মিলিত হয়ে প্রচুর পরিমাণ জলীয়বাষ্প সৃষ্টি করার কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হয়েছে।’

এ আবহাওয়াবিদ বলেন, চলতি বছর পুরোটাই এই রকম অতিরিক্ত বৃষ্টি হতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা স্বাভাবিক বৃষ্টি নয়, পাঁচ থেকে ১০ বছর পর পর এই ধরনের বৃষ্টি হয়। এগুলো মাথায় নিয়েই রাজধানীতে ড্রেনেজ সিস্টেমগুলো করা উচিত।