পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বাল্যবিয়ের শিকার স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু : আটক ৩
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় বাল্য বিবাহের শিকার স্কুল ছাত্রী তন্নীর (১৫) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে।
ঘটনার পর পৌর শহরের ৩ নং ওয়ার্ডের ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করা হয়। এ ঘটনায় মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত সোমবার (২৩ জানুয়ারি) ওই স্কুল ছাত্রীর ভাই মেহেদী হাসান মুন্না বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। এরমধ্যে আটককৃত ৩ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন-তন্নীর শ্বশুর মজিবুর রহমান সিকদার (মজিবুর মাষ্টার), শ্বাশুড়ি শিরিন আক্তার এবং ননদ মাকসুদা আক্তার মুনা। তন্নীর স্বামী মিনহাজুর রহমান রাব্বি (২২) ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে। আসামিদের গ্রামের বাড়ি তুষখালী ইউনিয়নের শাঁখাড়িকাঠি গ্রামে।
মারিয়া আক্তার তন্নী ঘোষের টিকিকাটা গ্রামের দুবাই প্রবাসী হাবিব হাওলাদারের মেয়ে এবং খাস মহল লতীফ ইন্সটিটিউশন থেকে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
জানা গেছে,গত বছরের ১৫ অক্টোবর রাব্বি এবং তন্নি ঢাকায় পালিয়ে যায়। এরপর অভিভাবকদের চেষ্টায় ছেলে এবং মেয়েকে মঠবাড়িয়ায় আনা হয়। মঠবাড়িয়া পৌর শহরের সাবেক কাউন্সিলর মঞ্জুর রহমান সিকদারের বাসায় রেজিস্ট্রার বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের পর তন্নী স্বামী ও শ্বশুর বাড়িতেই অবস্থান করছিল। কিছুদিন পরেই মোবাইল ফোন ব্যবহার এবং সন্দেহ সংসয় নিয়ে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার দিন সকালে ভিকটিম তন্নী অভিমান করে নিজের হাতে ব্লেড দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাড়িতে নিয়ে আসেন।এরপর রহস্যজনক মৃত্যর ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য ওইদিন সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
সাবেক কাউন্সিলর মঞ্জুর রহমান সিকদার জানান,মামলার ১ নং আসামি মজিবর মাষ্টারের ছেলে মিনহাজুর রহমান রাব্বি আমার আত্মীয়। ওই ছাত্রী নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর অভিভাবকরা তাদেরকে আমার বাসায় নিয়ে আসে। এরপর ২ লাখ টাকা অনাদায়ে স্থানীয় কাজীর মাধ্যমে রেজিস্ট্রিকৃত বিবাহ সম্পন্ন হয়। তবে নিকাহনামায় আমার কোন স্বাক্ষর নেই। কাজীর নাম নির্দিষ্ট করে বলতে না পারলেও তিনি বলেন,পৌরসভার ফরিদুল ইসলাম অথবা ইয়াকুব হোসেন এই দুই কাজীর মধ্যে একজনে এ বিবাহ রেজিস্ট্রার করেছে। তবে কাজী ফরিদুল ইসলাম ও ইয়াকুব হোসেন এ বিবাহ রেজিস্ট্রার করার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত আছে। ঘটনার সাথে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন