পাহাড় ধসের পর পর্যটন ব্যবসায় নেমেছে ধস
সাম্প্রতিক পাহাড় ধসের পার্বত্য এলাকায় বান্দরবানে ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলক কম হলেও এই দুর্যোগ নিয়ে আতঙ্ক রয়ে গেছে। বছরের এই সময়টায় জেলায় পর্যটকদের আনাগোনা থাকলেও এবার তাদেরকে দেখাই যাচ্ছে না। ঈদে যা কিছু বুকিং ছিল তার একটি বড় অংশই বাতিল করা হয়েছে।
গত বছর ঈদুল ফিতরে শহরের হোটেল-মোটেলগুলোতে কোন কক্ষ খালি ছিল না। কিন্তু এবার বুকিংয়ের আশায় বসে ব্যবসায়ীরা।
বান্দবানের বললেই চোখের সামনে ভাসবে উঁচু-নিচু পাহাড়ের ভাঁজ। সাঙ্গু নদীর তীরে অবস্থিত গোটা বান্দরবান যেন মুগ্ধতার শেষ নেই। দিগন্তু জুড়ে রয়েছে সবুজের পাহাড়। একদিকে নয়ানাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আঁকা-বাঁকা পথ, এগারটি আদিবাসী বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবন, অন্যদিকে রয়েছে মেঘের মিতালি। তাই ঈদের ছুটিতে প্রকৃতির নির্মল স্বাদ পেতে পর্যটকদের আকর্ষণ থাকে বান্দরবানকে ঘিরে। পাহাড়-পর্বত ছাড়াও রয়েছে অসংখ্য ঝিরি-ঝর্ণা, মেঘলার লেক, নাফাকুম ঝর্ণা ও থানচির বড় পাথড়, রয়েছে বগা লেক সহ নজরকারা স্বর্ণমন্দির ও রাম জাদি।
কিন্তু পাহাড় ধসের ঘটনায় এবার পর্যটকের মনে জেগেছে শঙ্কা। ঈদের ছুটিতে বুকিং বাতিল করেছেন অনেকেই। ফলে এবার ঈদে লোকসানের আশঙ্কা করছেন পর্যটন সশ্লিষ্ট হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা।
শনিবার বান্দরাবানের শৈলপ্রতাপ, নীলাচল, মেঘলা ও বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখা যায়, পর্যটন ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছে। তারা বলছিলেন, এ সময় প্রতিবছর প্রচুর দর্শণার্থীর আগমন ঘটে, প্রচুর লোকের সমাগম হয়। কিন্তু এবছর সেই তুলনায় অনেকটা কম।
বান্দরবান শহরের হোটেল হিলটনের ব্যবস্থাপক শুভ দাস বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোরা ও পার্বত্য এলাকায় পাহাড় ধসের কারণে আতঙ্কে বেশির ভাগ বুকিং বাতিল করেছে পর্যটকরা। যার কারণে এবার আশানুরুপ পর্যটক বোধহয় পাব না। যার কারণে ব্যবসায় ক্ষতির আশঙ্কা করছি।’
হলিদে ইন রির্সোট এর ব্যবস্থাপক মো. জাকির বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কিছু পর্যটক কম হবে। কারণ ঈদের চার থেকে থেকে দিন আগে আমাদের সব রুম বুক হয়ে যেত। কিন্তু এ বছর তুলনামূলক বুকিং কম হয়েছে।’
বান্দরবান হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি অতি বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটলেও বান্দরবানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম। তবে পর্যটকদের মনে আতঙ্ক কাজ করছে। যদিও বান্দরবানে পর্যটন স্পটগুলোর কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’
তবে পর্যটকদের জন্য প্রস্তুতি রয়েছে জেলা প্রশাসনের। জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ববস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা শহরের সাথে স্পটগুলোর সড়ক মেরামত করা হয়েছে এবং সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে। পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে চলাফেরা ও ঘুরাঘুরি করতে পারে সে ব্যাপরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন