সেনাবাহিনীর হাতে ১৭ লাখ টাকাসহ ৭ ডিবি পুলিশ আটক
টেকনাফে এক ব্যক্তিকে জিম্মি করে ১৭ লাখ টাকা ছিনিয়ে ফেরার সময় সেনা বাহিনীর হাতে গোয়েন্দা পুলিশের সাতজন সদস্য আটক হয়েছেন। টেকনাফের মেরিনড্রাইভ সড়কের শামলাপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সেনা বাহিনীর তল্লাশির সময় পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে পালিয়ে যান। সেনা সদস্যরা গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে মুক্তিপণের ১৭ লাখ টাকাসহ তাদেরকে আটক করেন।
টেকনাফের অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের মেজর নাজিম আহমদ ৭ ডিবি পুলিশকে ১৭ লাখ টাকাসহ আটকের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের দফায় দফায় বৈঠকের পর উদ্ধার ১৭ লাখ টাকা ওই ব্যবসায়ীকে ফেরত দিয়ে আটক ৭ ডিবি সদস্যকে কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
টেকনাফে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় স্থাপিত সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের প্রধান মেজর নাজিম আহমদ বলেন, ‘টেকনাফের মধ্যজালিয়া পাড়ার মৃত হোসেন আহমদের ছেলে আবদুল গফুরেরর স্বজনরা অভিযোগ করেন যে মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার শহর থেকে কিছু লোক গফুরকে ধরে নিয়ে টাকা দাবি করেছে। বুধবার ভোরে ১৭ লাখ টাকার বিনিময়ে গফুরকে একটি মাইক্রবাসে করে টেকনাফে নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।’
সাত ডিবি সদস্যকে আটকের বর্ণনা দিয়ে মেজর নাজিম আরো বলেন, ‘মাইক্রোবাসটি সকালে মেরিনড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারে চলে যাচ্ছে এমন তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের সেনা চেকপোস্টে মাইক্রোবাসটি থামানো হয়। সেনাবাহিনী মাইক্রোবাসটি তল্লাশি করতে চাইলে যাত্রীরা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়।’
‘এসময় সেনা সদস্যরা গাড়ি তল্লাশি করতে চাইলে এক ব্যক্তি গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। পরে গাড়ি তল্লাশি করে হলুদ রংয়ের কাপড়ের প্যাকেট থেকে ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়,’ বলেন মেজর নাজিম।
তিনি আরো বলেন, ‘১৭ লাখ টাকা উদ্ধারের পর বিষয়টি নিয়ে র্যাব ও পুলিশেকে জানানো হয়। পরে পুলিশ ও র্যাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। আটক ৭ জনকে পুলিশ সুপারের জিম্মায় দিয়ে ১৭ লাখ টাকা ওই ব্যবসায়ীকে ফেরত দেওয়া হয়েছে।’
কে এই গফুর?
উল্লেখ্য, আবদুল গফুর, তার ভাই জাফর আলম ওরফে টি টি জাফর ও তার ভাই কাউন্সিলর মনিরুজ্জমান পুলিশের তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী। গফুরের ভাই টি টি জাফর মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আনার এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন। মিয়ানমারের সাথে ইয়াবার হুন্ডি ব্যবসার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকার শীর্ষে আছে টি টি জাফর। জাফর মূলত দেশের নাম্বার ওয়ান ইয়াবা ব্যবসায়ী হাজী সাইফুল করিমের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন।
আবদুল গফুরের ভাই টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান জানান, তার ভাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে টাকার দাবি করার বিষয়টি সেনা বাহিনীকে জানানো হয়। টাকা প্রদান করে ভাইকে মুক্তি করার পর সেনা বাহিনীর সহায়তায় টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের আফরুজুল হক টুটুল জানিয়েছেন, গুটি কয়েক পুলিশ সদস্যের অপকর্মের জন্য পুরো বাহিনীর নাম খারাপ হচ্ছে। সেনাবাহিনীর হাতে আটক ও পালিয়ে যাওয়া ৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আইনগত ও বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন