বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার হরতাল
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে ৩০ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) আধাবেলা হরতাল ডেকেছে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। আটটি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত এ জোট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তোপখানা রোডে নিজ কার্যালয়ে সভা শেষে হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে।
খুচরা পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৩৫ পয়সা বাড়ানোর প্রতিবাদে ৩০ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত হরতাল আহ্বান করেছে তারা।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, ইউনাইডে কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুস সাত্তার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা মানসদ নন্দী, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক মনির উদ্দিন পাপ্পু।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গণশুনানিকে উপেক্ষা করে মালিক-আমলাদের স্বার্থরক্ষায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির একতরফা ঘোষণা অগণতান্ত্রিক এবং গণবিরোধী। অবিলম্বে বিদ্যুতের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করতে হবে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা প্রত্যাহারে সরকারকে বাধ্য করার জন্য আগামী ৩০ নভেম্বরের হরতালে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
এদিকে বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান এক বিবৃতিতে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন কর্তৃক ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে ইতোপূর্বে সাতবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে, বর্তমান বৃদ্ধি নিয়ে মোট আটবার দাম বাড়ালো। মূল্যবৃদ্ধির ফলে এর কুপ্রভাব বাড়ি-ভাড়া থেকে শুরু করে কৃষি, সেচ ও সব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাবে। যা জনজীবনে দুঃসহ যন্ত্রণা বয়ে আনবে।
তিনি বলেন, গণশুনানিতে বিইআরসি, ভোক্তা সংগঠন ক্যাব ও বাসদসহ বামপন্থী দলগুলোর মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে দেয়া বক্তব্যের বিপরীতে কোনো যুক্তি দিতে পারে নাই কমিশন। তারপরও রেন্টাল-কুইক রেন্টালের মাধ্যমে কতিপয় মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর মুনাফার স্বার্থে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর এই ঘোষণা বিইআরসির গণশুনানিকে আবারো গণতামাশা বলে প্রতীয়মান করল।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপাদান জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কমে গেলেও বাংলাদেশে তা কমানো হয়নি। বিদ্যুতের জন্য আমদানি মূল্যে জ্বালানি সরবরাহ এবং ভর্তুকির টাকাকে ঋণ হিসেবে দেখিয়ে সুদ ধার্য না করলে বিদ্যুতের দাম কোনো ক্রমেই বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না বলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এবং পিডিবি’র চেয়ারম্যান বলেছিলেন। তারপরও আমদানি মূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ না করে দাম বাড়ানোর ঘোষণা তাহলে কার স্বার্থে-দেশবাসী তা জানতে চায়।
তিনি বলেন, এমনিতেই চাল, ডাল, তেল, নুন, পিয়াজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত। এরপর বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা মরার উপর খাড়ার ঘা’র সামিল।
এদিকে আবারও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি জনগনের সঙ্গে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেছেন, ব্যর্থ ও জুলুমবাজ সরকার নিজেদের লুটপাটকে নির্বিঘ্ন করতেই সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে আবারো বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করেছে। বারবার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করে প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন