সিঙ্গাপুরে বিজয় মঞ্চে বাংলাদেশের বডি বিল্ডার হাসিব হলি
‘মিস্টার ইউনিভার্স ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে’ সেরা ছয়ে থাকার লক্ষ্য নিয়েই সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছিলেন ২০১৫ সালের হাসিব হলি। প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে প্রথমবার বডি বিল্ডিংয়ের বিশ্বমঞ্চে অংশ নিয়েই বাজিমাত করলেন ‘মিষ্টার বাংলাদেশ’ খেতাব জয়ী এই বডি বিল্ডার। প্রতিযোগিতায় ‘বিচ মডেল মেনস ফিজিক্স’ ক্যাটাগরিতে ১৬ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছেন তিনি।
দেশ ছাড়ার আগে হাসিব বলেছিলেন, ‘প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে আমি অংশ নিতে যাচ্ছি। এটা আমার জন্য যেমন রোমাঞ্চের, তেমনি ভীষণ গর্বেরও। আমার এই শরীর বাংলাদেশের জন্য। এই আসরে ৫০ দেশের অসংখ্য বিশ্বমানের বডিবিল্ডার অংশ নিচ্ছে। আমি নিজের সেরাটা দিয়েই খেলবো। লক্ষ্য হবে প্রথম থেকে ষষ্ঠ স্থানের মধ্যে থাকা।’
দেশবাশীকে দেয়া কথা রেখেছেন তিনি। শীর্ষ ছয়ে থেকেই বীরের বেশে দেশে ফিরছেন হাসিব হলি। রোববার (১জুলাই) অনুষ্ঠিত ‘বিচ মডেল মেনস ফিজিক্স’ ক্যাটাগরিতে তিন জন বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। এ সময় বিচারকরা সেরা ছয় জনকে মঞ্চে ডেকে নেন। মঞ্চে উঠের বাংলাদেশের বডি বিল্ডার হাসিব হলি।
লক্ষ্য পুরনের পর প্রতিক্রিয়ায় হাসিব হলি বলেন, ‘প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে মিস্টার ইউনিভার্স ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে সেরা ছয়ের লক্ষ্য পুরন করতে পেরে আমি অনন্দিত। এই আসরে সারাবিশ্বের সেরা বডি বিল্ডাররা অংশ নেয়। তারা অনেক অভিজ্ঞ। আমার লক্ষ্য ছিল সেরা ছয়ে থাকা। সেই লক্ষ্য পূরণ হওয়ায় বেশ খুশি লাগছে। তার মানে আমি সঠিক পথেই আছি।’
নিজের পরবর্তী লক্ষ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মিস্টার ইউনিভার্স ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে’র পরের আসরে অংশ নিতে চাই। পরেরবার আমার লক্ষ্য ফিজিক্স ফিটনেস মডেল ক্যাটাগরি। কারণ আমার বডির সঙ্গে এই ক্যাটাগরি মানানসই।
দেশের তরুণ ও উঠতি বডি বিল্ডারদের উদ্দেশে হাসিব হলি বলেন, যারা নিজেদের পেশাদার বডি বিল্ডার হিসাবে তৈরি করতে চান। তারা যেন দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করেন। সেই সাথে প্রশিক্ষিত ট্রেনারের অধীনে প্রশিক্ষণ নেন। কারণ অল্প সময়ে কোন ভাল ফলাফল করা সম্ভব না। আজকের এই পর্যায়ে আসতে আমার ১১ বছর লেগেছে।
বাংলাদেশের এই বডি বিল্ডার আরও বলেন, আমি থ্যাইল্যান্ডের ট্রেইনার মি. সিথির অধীনে প্রশিক্ষন নিয়েছি। যার ফল হাতেনাতে পেয়েছি। আমি বাংলাদেশের একমাত্র অ্যাডভান্সড সার্টিফাইট ট্রেইনার।
মিস্টার ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় হলি অ্যাথলেটিক বডি বিল্ডিং ক্যাটাগরিতেও অংশ নেন (উচ্চতা : ১৬৫-১৭০ সে.মি., ওজন : ৭০-৮০ কেজি)। তবে এই ক্যাটাগরিতে প্রত্যাশিত সাফল্য পাননি তিনি। ফিজিক ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়ে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেন।
উল্লেখ্য, প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ২০১৭ সালে ‘নাব্বা ডব্লিউএফএফ অ্যামেচার এশিয়ান বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায়’ স্বর্ণপদক জিতেছেন হাসিব হলি। তাছাড়া ২০১৫ সালে জাতীয় বডিবিল্ডিং চ্যাম্পিয়ন হয়ে ‘মিস্টার বাংলাদেশ’ খেতাব অর্জন করেন তিনি। বিশ্বমানের এই আসরে অংশ নিতে হলি প্রস্তুতি নিয়েছিলেন প্রায় আট মাস ধরে। এক্ষেত্রে তার ব্যক্তিগত খরচ হয়েছে প্রায় আট লাখ টাকা। তার সেই বিনিয়োগ যে কিছুটা হলেও সফল হয়েছে, ষষ্ঠ হওয়াটাই তার প্রমাণ। সোমবার দেশে ফেরার কথা রয়েছে হাসিব হলির।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন