চ্যারিটেবল মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে রিভিশন
দুর্নীতির অভিযোগে দণ্ড নিয়ে কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে তার পক্ষে রিভিশন করা হয়েছে হাইকোর্টে।
একইসঙ্গে খালেদার অনুপস্থিতিতে কারাগারে স্থাপিত আদালতে বিচার চলবে বলে বিশেষ জজ আদালতের দেয়া আদেশও বাতিল চাওয়া হয়েছে রিভিশন আবেদনে। আবেদনে দুদক ও রাষ্ট্রকে বিবাদী করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এই রিভিশন আবেদন দায়ের করেন। তিনি নিজেই জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানিতে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামান আদেশ দেন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই তার বিচারকাজ চলবে। ওই দিন শুনানিতে হাজির হয়েছিলেন না খালেদা জিয়া।
আদেশে আদালত বলেন, খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হয়ে ৫ সেপ্টেম্বর বলেছেন, তিনি বারবার আদালতে আসতে পারবেন না। এরপর ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর এবং আজও (২০ সেপ্টেম্বর) খালেদা জিয়া কারাগার কর্তৃপক্ষকে বলেছেন, তিনি আদালতে আসতে পারবেন না। অর্থাৎ আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, খালেদা জিয়া আদালতে আসতে অনিচ্ছুক। অথচ মামলার দুই আসামি প্রতিদিন হাজির হচ্ছেন। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হননি। এমন অবস্থায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাকে জামিনে রেখে বিচার চলবে।
রিভিশনের বিষয়ে খালেদার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মনে করি, যেহেতু কারাগারে আদালত স্থাপন করা হয়েছে, সেটা অবৈধ, এ ছাড়া বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। তাই অসুস্থ কোনো ব্যক্তির বিচার চলতে পারে না এবং কারাগারে স্থাপন করা আদালত আইনবহিভূর্ত ও অবৈধ। তাই এই দু’টি বিষয় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিভিশন করেছি। খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচারিক (কারাগারে স্থাপিত) আদালতের বিচার কার্যক্রম বন্ধ এবং মামলা বাতিল চাওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কবে শুনানি হবে তা নিশ্চিত নয়।
কিন্তু বিচারিক আদালতে মামলার বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিন ধার্য রয়েছে।
এর আগে আইন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের একটি কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করেন। ৫ সেপ্টেম্বর সেখানে আদালত বসেন। কারাগারে থাকা খালেদা জিয়া সেদিন আদালতে হাজির হয়ে আদালতকে বলেছিলেন, এ আদালতে ন্যায়বিচার নেই। তিনি অসুস্থ। তিনি আর আদালতে আসবেন না। যত দিন ইচ্ছা আদালত তাকে সাজা দিতে পারেন।
এর আগে এ মামলার বিচার চলছিল পুরান ঢাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে। এ মামলায় দুদকের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। খালেদা জিয়াসহ তিন আসামির যুক্তিতর্ক শুনানি বাকি রয়েছে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার অপর আসামিরা হলেন- হারিছ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম খান।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন