শেখ হাসিনা আবারও ক্ষমতায় আসবেন, আশা বিশ্বনেতাদের

বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রধানদের আশাবাদ— বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে জয়লাভ করে পুনরায় সরকার গঠন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা। বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) শেখ হাসিনার সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠকে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিশ্ব নেতারা।

নিউ ইয়র্কের হোটেল গ্যান্দে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের নেতৃত্বে থাকবেন এমনটাই সব নেতারা আশা করছেন।’ প্রধানমন্ত্রী প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন ব্রিফিংয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘের ৭৩তম সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইন বৈঠকে এস্তোনিয়ান প্রেসিডেন্ট কের্স্তি কালজুলাইড, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পে গ্রান্দ্রি, ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক মিস হেনরিটা ফোর, মিয়ানমার রাষ্ট্রদূত বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবে বিশেষ দূত ক্রিস্টিন স্ক্র্যানার বার্জনার ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিনিধি ফেডরিকা মোঘেরিনির সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়া, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের সংলাপেও বক্তব্য রেখেছেন শেখ হাসিনা। কপ ২৪ ও পরবর্তী বিষয়ে আলোচনার সময় শেখ হাসিনাকে সবাই বলেছেন, ‘আমরা আশা করি, আবারও আপনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে পাবো।’

শহীদুল হক বলেন, ‘সংস্থা ও রাষ্ট্রপ্রধানরা বলেন যে, তারা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী ভূমিকা নিয়ে নিয়ে আশাবাদী।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সবাই বলেন যে, পরবর্তী বছরেও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার সঙ্গে বৈঠক করতে চান তারা।’

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়ন ও গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্র প্রধানরা। তারা বলেছেন, ‘আশা করি, এমন আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে আপনার সঙ্গে আরও দেখা হবে।’

শহীদুল হক বলেন, শেখ হাসিনার দেখানো গণতান্ত্রিক পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আসন্ন নির্বাচন অবাধ, ‍সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা। এতে করে গণতান্ত্রিক ও উন্নয়নের ধারণা অব্যাহত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী এসময় রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি তুলে ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি সবাইকে আহ্বান জানান, যেন মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুত করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সমস্যার সমাধান বাংলাদেশে নেই। এর সমাধান মিয়ানমারের কাছেই রয়েছে। রোহিঙ্গাদের অবশ্যই তাদের দেশে ফিরে যেতে হবে এবং অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। যতদিন তারা সেই অধিকার না পাচ্ছে বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দেবে।’ তবে এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে বলেও জানান তিনি।

রোহিঙ্গাদের ভাষানচরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের সহায়তায় সবাইকে এগিয়ে আসা জরুরি। আর চার হাজার রোহিঙ্গার বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এখনই শুরু করা উচিত।’

মিয়ানমর রাষ্ট্রদূত বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিমেষ দূত ক্রিস্টিন স্ক্রানার বার্গেনার বলেন, ‘তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশে ও মিয়ানমার সফর করেছেন।’ তিনি আশা করেন, মিয়ানমারকে তিনি বোঝাতে সক্ষম হবেন যেন তারা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে।

ক্রিস্টিন বলেন, ‘সংকট সমাধানে তিনি আবারও বাংলাদেশ সফর করবেন।’ তিনি বলেন,‘রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘে শেখ হাসিনার দেওয়া পাঁচটি প্রস্তাবের একটি ছিল মিয়ানমারে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত নিয়োগ।’

বিশেষ দূত বলেন, ‘আমাকে নিয়োগের মাধ্যমেই সেই প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হয়।’ রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলোর প্রধানরা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘চলতি বছর বাংলাদেশের জিডিপি ৭ দশমিক ৮৬ শতাশং অর্জনের বিষয়টি উল্লেখ করে বিশ্বনেতারা প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেন যে, এই উন্নতি কিভাবে সম্ভব হলো।’ তারা বলেন, ‘এত প্রতিবন্ধকতা থাকার পরও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’