ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের ৩৭৮ আইন এখনও চালু : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে জানিয়েছেন ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে প্রণীত ৩৭৮টি আইন বাংলাদেশে এখনও চালু রয়েছে। এসময় এসব আইনের একটি তালিকাও সংসদে উপস্থাপন করে তিনি জানান, ‘বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে প্রচলিত আইনের সংস্কার, সংশোধন ও আধুনিকীকরণ হয়ে থাকে। এ লক্ষ্যে অচল আইনগুলো বাতিল, প্রচলিত আইনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও তার যুগোপযোগী সংস্কার, ক্ষেত্রমতে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা আইন কমিশন আইন সংশোধন বা বাতিল করে নতুন আইন প্রণয়নের সুপারিশ করলে সরকার সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সোমবার সংসদের বৈঠকে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে মাহফুজুর রহমানের (চট্টগ্রাম-৩) প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান। আইনমন্ত্রীর দেওয়া তালিকায় দেখা যায়, এর মধ্যে রয়েছে ১৭৯৯ সালের The Wills and Intestacy Regulation থেকে শুরু করে ১৯৭০ সালে প্রণীত The Government and local Authority Lands Buildings (Recovery of Possession) Ordinance (East Pakistan Ordinance).
দেশের প্রচলিত আইনের সংস্কার, সংশোধন ও আধুনিকীকরণ একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ আইনমন্ত্রী জানান, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত আগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রযোজ্য আইনকে একই বছর ১০ এপ্রিল তারিখে জারিকৃত Laws Continuance Enforcement Order দিয়ে একই তারিখে জারি করা Proclamation of Independence-এর বিধান সাপেক্ষে অব্যাহত রাখা হয়। অব্যাহত থাকা ওই আইনগুলোতে পরে সংবিধানের ১৪৯ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে হেফাজত করা হয়েছে। ১৯৭৩ সালে Bangladesh Laws (Revision and Declaration) প্রণয়নের মাধ্যমে স্বাধীনতাপূর্ব আইনগুলোকে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও অভিযোজনপূর্বক বহাল রাখা হয়েছে।
ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলা তিন লাখ : এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, দেশের ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে (৩১ ডিসেম্বর ২০১৮) বিচারাধীন মামলার সংখ্যা দুই লাখ ৯৪ হাজার ৪০৮টি।
বিচারাধীন মামলা ৩৫ লাখ ৬৯ হাজার : শামসুল হক টুকুর (পাবনা-১) প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, দেশে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা (৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত) ৩৫ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫০টি। এর মধ্যে উচ্চ আদালতে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৯৪টি ও নিম্ন আদালতে ৩০ লাখ ৩২ হাজার ৬৫৬টি। মোট মামলার মধ্যে দেওয়ানি ১৪ লাখ ২৯ হাজার ৮৬১টি, ফৌজদারি ২০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭ হাজার এবং অন্যান্য ৯১ লাখ ৮২২টি।
সরকারী খরচে আইনগত সহায়তা দেয়া হচ্ছে শ্রমজীবী ও প্রান্তিক বিচারপ্রার্থীদের: এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) অপর প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক জানিয়েছেন, দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত ও বিচার পেতে অসমর্থ প্রান্তিক পর্যায়ের বিচারপ্রার্থী ও শ্রমজীবী জনগণকে সরকারী খরচে আইনগত সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার তত্ত্বাবধানে সরকার গঠিত কমিটি লিগ্যাল এইড অফিস কাজ করছে। তিনি আরো জানান, সরকারী খরচে আইনগত পরামর্শ প্রদান,বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ, বিনামূল্যে ওকালতনামা সরবরাহ, মামলা পরিচালনার জন্য আইনজীবী নিয়োগ, আইনজীবীর ফি পরিশোধ, সালিশকারীর সম্মানী পরিশোধ, আদেশের অনুলিপি সরবরাহ, ডিএনএ টেস্টের ব্যয় পরিশোধ এবং পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ব্যয়সহ প্রাসঙ্গিক সকল ব্যয় পরিশোধ করা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন