কোনো জিনিস বাতিল নয়, সবকিছুতে টাকা আয়
ধরুন, আপনার ঘরে একটি রেফ্রিজারেটর কিংবা ওয়াশিংমেশিন প্রয়োজন, কিন্তু নতুন কেনার সামর্থ্য নেই। আবার অন্য কেউ হয়তো ব্যবহার না করে ঘরেই ফেলে রেখেছেন জিনিসটি, যা মেটাবে আপনার প্রয়োজন।
কারো জন্য অপ্রয়োজনীয় কিন্তু সেই একই পণ্যই আবার মেটাচ্ছে অন্য কারো চাহিদা। যুগ যুগ ধরে হাটে ঘাটে পুরনো পণ্য বিপণনের এমন ধারণা এবার নতুন মাত্রা পেয়েছে, হালের জনপ্রিয় ফেসবুক বাণিজ্যের হাত ধরে। যে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কয়েকজন উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠিত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রিসাইকেল বিনের মাধ্যমে। এই উদ্যোগের প্রশংসা করে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রায় সব শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণে প্রতিদিনের পণ্য বেচাকেনার মাধ্যমে বাড়ছে অভ্যন্তরীণ অর্থের সঞ্চালনও।
আপনার দরকার একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, যেখানে মাত্র কয়েক মাস আগে খোলা পেজ রিসাইকেল বিন দিচ্ছে পুরনো প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার এমনই সুযোগ। যার মাধ্যমে নিজের প্রয়োজন নেই কিন্তু অন্য কারো কাজে লাগবে, ঘরে বসেই এমন সব পণ্য বেচাকেনা করছেন প্রায় ১০ লাখ মানুষ। এখানে প্রচলিত বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে যেমন পণ্য কেনা যায়, প্রয়োজন ফুরিয়ে যাওয়া পণ্য বেঁচে করা যায় বাড়তি আয়।
কেউ কিনছেন গৃহপরিচারিকার বিয়ের জন্য শাড়ি, কেউ কিনছেন অক্সিজেন কিংবা নেবুলাইজার মেশিন। শাড়ি, গহনা, গৃহস্থালি সামগ্রী, আসবাব, কী নেই এই প্ল্যাটফর্মে?
উদ্যোক্তারা বলছেন, এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পুরোন পণ্য কেনা বেচা করে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হতে পারেন অনেকেই। করোনাকালীন সময়ে যারা চাকরি হারিয়েছেন, যাদের কিছু অর্থের প্রয়োজন ছিল, তারা পুরনো পণ্য বিক্রি করে কেউ টাকা পেয়েছেন, কেউ বা আবার পুরনো কোনো জিনিস কম দামে কিনেছেন।
তবে শুধু পণ্য বেচাকেনা নয়, পেজের সব সদস্যের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি এ অনলাইন প্ল্যাটফর্মের পরিবেশ রক্ষায়, আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতেও কাজ করছেন অনেক স্বেচ্ছাসেবী।
রিসাইকেল বিনের স্বত্বাধিকারী ফ্লোরিডা শারমিন সেতু ও মাসুম আব্দুল্লাহ দম্পতি। ফ্লোরিডা জানান, ফেসবুকে কোনো এক সেলিব্রিটির একটি জামদানি শাড়ি তার খুব পছন্দ হয়, কিন্তু এত দামি শাড়ি কেনার সামর্থ্য না থাকায় পুরনো পণ্য বিক্রির এ প্ল্যাটফর্মের চিন্তা তার মাথায় আসে। স্বামী মাসুম আব্দুল্লাহ জানান, পুরনো পণ্য বিক্রি ছাড়াও গ্রুপে ভালোবেসে দিতে চাই অপশনটি তারা রেখেছেন।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, অভ্যন্তরীণ অর্থের লেনদেন বাড়নোর সঙ্গে এমন উদ্যোগ ভূমিকা রাখছে, অর্থ আর পণ্যের অপচয় বন্ধেও। কিন্তু যেহেতু আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি জড়িত এই প্ল্যাটফর্মের সাথে, সেক্ষেত্রে অনেক ভুয়া ক্রেতা বিক্রেতার জন্ম হতে পারে ফেসবুক পেজকে ঘিরে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য গ্রুপ পরিচালনাকারীদের সজাগ দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান তারা। বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জন্য সরকারের নজরদারি ও নীতিমালা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তারা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন