নরসিংদীতে লকডাউনের আগের রাতে উপচে পড়া ভিড়

নরসিংদীতে লকডাউন শুরুর আগের দিন রাতে রাস্তাঘাট সহ দোকানপাটে জনসাধারণের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। আবার অনেকে ১ জুলাই শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের খবর পেয়ে ফিরছে বাড়ী।
কিন্তু হঠাৎ বিকালের পরে সন্ধ্যার আগে মুষলধারে বৃষ্টি নেমে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে জনসাধারণ। কিছু কিছু মানুষের মুখে স্বস্তির আবাস দেখা পেলেও বেশির ভাগ জনসাধারণের মুখে কষ্টের দুর্লভ ছায়া লক্ষ্য করা যায়।

এই লকডাউনের কারণে তারা সুন্দরভাবে কোরবানীর ঈদ পালন করতে পারবে না বলে শংকা প্রকাশ করেছেন।

গার্মেন্টস শ্রমিক নাছিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে তাতে আমাদের শ্রমিকের উপর ভীষণ চাপ সৃষ্টি হয়েছে এ কারণে আমাদের বাড়ী ফিরতে হচ্ছে যার কারণে ঢাকা থেকে নরসিংদী আসতে আমার ১ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে তাও আমি এখনো বাড়ীতে পৌঁছাতে পারিনি। শুধু আমি নই, আমার মতো অনেক মানুষই এই হয়রানীর শিকার হয়েছে। শুধু লক ডাউন দিলে চলবে না, আমার দৃষ্টিতে প্রথমে জনগণের দাবী পূরণ করতে হবে তারপর লকডাউন দেয়া উচিত।

রিক্সাচালক বাছেদ মিয়া বলেন, ৩টি সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় আমি খুবই কষ্টে রিক্সা চালিয়ে জীবন যাপন করছি। তবুও ভালো ছিলাম। কিন্তু এই লকডাউনের কথা শুনে আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। কারণ আমি ভাবছি, আমার সন্তানদেরকে কে ঈদের পোশাক কিনে দিবে? কে তাদের ভরণ পোষনের দায়িত্ব নিবে? মাঝে মধ্যে শুনি সরকার এই দিয়েছে সেই দিয়েছে, কিন্তু আমরাতো কিছুই পাই না। এই পর্যন্ত কোন সহযোগিতা পাই নি।

বিকেলের পরে নরসিংদীর জেলখানা মোড় ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় দেখা যায় স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। সব গ্রাহক মিলে ক্যাশ কাউন্টারের সামনে জড়ো হয়ে অপেক্ষা করছেন। সাধারণ লেনদেনকারীদের কাউন্টারগুলোতে মোটামুটি সামাজিক দূরত্ব মেনে অপেক্ষা করা হলেও সঞ্চয়পত্র ক্রয়-বিক্রয় কাউন্টারের সামনে জড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন গ্রাহক।

সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যাংকারদের।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, লেনদেনের সময় কমানো হলেও গ্রাহক কমেনি। তাই যতক্ষণ গ্রাহক থাকে ততক্ষণ লেনদেন করতে হচ্ছে।

এদিকে জেলখানার মোড়ে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা নিরাপত্তা দিতে কঠোর ভূমিকা পালন করছি মহাসড়কে। যেহেতু রাত পোহালে আসছে কঠোর বিধি নিষেধ সেহেতু জনসাধারণের উপচে পড়া ভিড়ের কারণে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।