‘অপহৃত’ কিশোরীকে পতিতালয়ে বিক্রির হুমকিতে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা
‘ঈদের দিন সন্ধ্যায় এক কিশোরীকে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানা এলাকা থেকে অপহরণ করে, মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে। মুক্তিপণ না দিলে তাকে দৌলতদিয়া ঘাটে পতিতাপল্লীতে বিক্রি করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ’
বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে এমনই একটি বার্তা পাঠিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি মো. সোহেল রানা।
তিনি জানান, বার্তা পেয়েই দ্রুত মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দুলাল আকন্দকে বিষয়টি জানায় পুলিশের উইং।
অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুততম সময়ে নিতে ওসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এরপর মুক্তাগাছা থানার ওসি প্রযুক্তির সহায়তায় ও প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারেন মেয়েটির অবস্থান রাজবাড়ি জেলার পাংশা থানার অন্তর্গত একটি এলাকায়। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদুর রহমানকে নির্দেশনা দেয় যে, মুক্তাগাছার ওসি সঙ্গে সমন্বয় করে অপহৃত মেয়েটিকে উদ্ধার করতে।
কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য এসআই মাসুদুর রহমান ও এসআই মো. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে দুটি টিমকে নিয়োজিত করেন পাংশা থানার ওসি।
সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর সাইবার ও ডিবি টিমসহ পুলিশের একাধিক টিমের নিরলস প্রচেষ্টায় কিশোরীকে শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজবাড়ি জেলার পাংশা থানার সরিষা ইউনিয়নের পিড়ালীপাড়া গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়।
অপহরণকারী হিসেবে চিহ্নিত দুর্জয়কে আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজমল আল বাহার মেয়েটিকে উদ্ধারে সহযোগিতা করেন। উদ্ধার অভিযানসহ অপারেশনাল সার্বিক বিষয়াদি তত্ত্বাবধান করেন রাজবাড়ি জেলা পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান এবং ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান।
মেয়েটিকে উদ্ধারের পর পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছে, কয়েক মাস আগে অনলাইনে পরিচয়ের সূত্র ধরে দুর্জয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মেয়েটির। একপর্যায়ে বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে দুর্জয়ের সঙ্গে পালিয়ে যায় মেয়েটি। দুর্জয় মেয়েটিকে প্রথমে তার নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। তারপর, সেখান থেকে তার নানাবাড়িতে রেখে আসে মেয়েটিকে।
পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং বলছে, মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- সে দুর্জয়কে ভালোবাসে এবং তার সঙ্গেই থাকতে চায়।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুর্জয়ের দিকের কেউ বা এলাকার কোনো দুষ্টচক্র কোনোভাবে মেয়েটির পরিবারের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে দুর্জয় ও মেয়েটির পরিবারের দুর্বলতার সুযোগে কিছু সুবিধা আদায় করতে চেয়েছিল। এ বিষয়ে তদন্ত করে অপরাধীদের খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এই ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন