লালমনিরহাটে চাকুরীর নামে প্রতারণা : কার্যালয় তালাবদ্ধ ও ভুক্তভোগীদের অফিস ঘেরাও
লালমনিরহাটে নবদিগন্ত সিকিউরিটি সার্ভিস নামক একটি প্রতিষ্ঠানের নামে প্রতারণার অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। কয়েক’শত চাকরি প্রত্যাশী উঠতি বয়সী ছেলেদের কাছে সিকিউরিটি সার্ভিসের চাকুরি দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কয়েক লক্ষাধিক টাকা।
জানা গেছে, বুধবার বিকালে জেলার আদিতমারি উপজেলার সাপ্টিবাড়ী তেতুলতলা এলাকায় অবস্থিত নব দিগন্ত সিকিউরিটি সার্ভিসের প্রধান কার্যালয়ে চাকুরি প্রত্যাশী অর্ধশত ব্যক্তি টাকা ফেরতের দাবিতে অফিসটি ঘেরাও করেন। এরপর আদিতমারি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং কার্যালয় তালাবদ্ধ করে দেন।
এলাকাবাসী জানান, চলতি বছরে জুলাই মাসে একটি তামাক ভর্তি গোডাউন ও পাশের দুইটি রুম ভাড়া নিয়ে সিকিউরিটি সার্ভিসের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। নিজেদের কার্যক্রমকে তড়ান্বিত করতে সুকৌশলে একটি গ্রামের ভিতরে রুম ভাড়া নিয়ে দেড় মাস যাবৎ করা হতো এই প্রতারণা। তামাক ভর্তি গোডাউনের একপাশে সিকিউরিটির পোশাক ও বাংলাদেশ পুলিশের স্টিকার লাগানো বুট জুতা রাখা হয়েছে। চাকুরি প্রত্যাশী ব্যক্তিদের এই পোশাক ও জুতা সরবারহ করা হতো।
প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং অফিসার মোঃ জসিম আলী বলেন, আমি দেড় মাস হলো এই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করছি। আমরা চারজন চাকুরিতে জয়েন করার পূর্বে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জিয়াউর রহমান সবুজের নিকট প্রত্যেকেই জামানত হিসেবে ৩৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছি।
হারাটি ইউনিয়নের শাহজালাল বলেন, স্থানীয় বাজারে আমার বাবা কলার ব্যাবসা করেন। আমার কাছে সিকিউরিটি সার্ভিসের চাকুরি দেওয়ার কথা বলে পাঁচ হাজার টাকা নেওয়া হয়। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় করোনা কালে তাকে ভাতার ব্যাবস্থা, রেশনের ব্যাবস্থা করে দেওয়া হবে তবে তাকে কাজ করতে হবে ৪০ দিন । এরপর চাকুরির জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নাটোর জেলায়। সেখানে তাকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকুরি না দিয়ে লেবারের কাজ করানো হয়। সেখানে তিনি দু’দিন না খেয়ে ছিলেন তাই চলে এসেছেন এমনটি প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
চাকুরি প্রত্যাশী অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া আসাদুজ্জামান বলেন, আমি সিকিউরিটি গার্ডের চাকুরির জন্য চার হাজার একশত টাকা দিয়েছি। আমাকে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে অনেকদিন থেকে টালবাহানা করা হচ্ছে। তাই আমি টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য ঘুরছি।
এলাকাবাসী খুশিনুর আলম বলেন, তারা প্রায় দেড় মাস যাবৎ এখানে রুম ভাড়া নিয়ে সিকিউরিটি সার্ভিসের কাজ করছেন। কয়েকদিন থেকে প্রায় প্রতিদিনই চাকুরি প্রত্যাশী ছেলেদের অবিভাবক টাকা ফেরতের জন্য অফিসের সামনে আসতো।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর বাবুল মিয়া জানান, দীর্ঘ দুই মাস যাবত আমাকে সিকিউরিটি সার্ভিস অফিসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জিয়াউর রহমান সবুজ নিজে পরিচালক ও তার পিতা মতিয়ার রহমান স্বঘোষিত চেয়ারম্যান হয়ে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছে। তাদের প্রতারণার বিষয়ে শীঘ্রই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
আদিতমারি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে লিখিত কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটির গোডাউনে বিডি পুলিশ স্টিকার সমন্বিত বুট জুতা থাকার বিষয়ে ওসি আরও বলেন, এরকম জুতা মার্কেটে কিনতে পাওয়া যায়। আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে বুটজুতা পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন