বাংলাদেশসহ ৪ দেশ থেকে কর্মী নেবে সিঙ্গাপুর
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ তৈরি করতে দেশের অত্যন্ত-প্রয়োজনীয় সব খাতে অভিবাসী শ্রমিক নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সিঙ্গাপুর।
শনিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং নতুন বছরের শুভেচ্ছা বার্তায় অভিবাসী শ্রমিক নেওয়ার এই ঘোষণা দিয়েছেন।
সিঙ্গাপুর সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত, চীন এবং ফিলিপাইন থেকে শ্রমিক, দক্ষ জনশক্তি এবং পেশাদারদের নিয়ে থাকে। কোভিড-১৯ মহামারিতে বিপর্যস্ত দেশটির অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে এই চার দেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ইঙ্গিত দিয়েছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি।
তবে কোন দেশ থেকে কতসংখ্যক কর্মী নেওয়া হতে পারে সে বিষয়ে পরিষ্কার কিছু জানা যায়নি।
বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিসংখ্যান বলছে, প্রত্যেক বছর গড়ে প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী দক্ষিণ এশিয়ার নগর রাষ্ট্র সিঙ্গাপুরে কাজের সন্ধানে যেতেন। করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর বাংলাদেশি কর্মীদের সিঙ্গাপুরে রফতানি হ্রাস পায়। ২০২০ সালে বাংলাদেশ থেকে মাত্র ১০ হাজার ৮৫ জন কর্মী সিঙ্গাপুরে যান।
এরপর গত বছরের মে মাস পর্যন্ত দেশটিতে ১২ হাজার ১৩৯ জন বাংলাদেশি শ্রমিক গেছেন। মহামারির কারণে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ থাকায় এর পর থেকে আরও কোনও কর্মী সিঙ্গাপুরে পাঠানো যায়নি।
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সিঙ্গাপুর অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অভিবাসী কর্মীদের নিয়ে আসবে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিভাবান কর্মীরা যাতে সিঙ্গাপুরে এসে সমাদৃত বোধ করেন, সেটি নিশ্চিত করা হবে। একই সঙ্গে তারা সিঙ্গাপুরবাসীর পরিপূরক হয়ে উঠবেন বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, ২০২২ সাল হবে রূপান্তরের সময়। দেশের অর্থনীতি দৃঢ়ভাবে পুনরুদ্ধার হচ্ছে এবং এই নগর রাষ্ট্র বাকি বিশ্বের সাথে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপন করছে।
আগামী বছর সিঙ্গাপুরের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৩ থেকে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে আশা করে লি বলেন, নতুন কোনও বাধা ছাড়াই সিঙ্গাপুরের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ঘটবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সাথে ধাপে ধাপে। দেশটির সরকার ‘দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য অর্জনের জন্য আগাম পরিকল্পনা নিয়েছে’ বলে জানিয়েছেন তিনি।
সিঙ্গাপুরের এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ওমিক্রনের প্রভাব মোকাবিলার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছি। সে কারণে আমরা কিছুটা আত্মবিশ্বাসী হতে পারি যে, সামনে যে কোনও ধরনের বাধা আসুক না কেন আমরা তা মোকাবিলা করবো।
মহামারি পরবর্তী অর্থনীতিতে অবশ্যই নতুন প্রবৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান তৈরি এবং সমৃদ্ধি আনতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তবে স্থিতিশীল বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক পরিবেশের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে এবং এর কেন্দ্রে থাকবে মার্কিন-চীন সম্পর্ক।
লি সিয়েন বলেন, বৈশ্বিক এই দুই শক্তির বিভাজন অনেক বেশি এবং গভীর। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে এ দুই দেশের সাম্প্রতিক উচ্চ-পর্যায়ের তৎপরতা এবং বাস্তবিক সহযোগিতা বেশ উৎসাহব্যাঞ্জক।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগণের কল্যাণের জন্য আমরা ২০২২ সালের প্রথম দিনে কার্যকর হওয়া আঞ্চলিক ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব-সহ বাণিজ্য উদারীকরণ এবং আঞ্চলিক একীভূতকরণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।’
চীনের নেতৃত্বে বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্যিক এই ব্লকে ১০টি সদস্য দেশ রয়েছে। ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বমূলক এই ব্লকে রয়েছে, অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, জাপান, লাওস, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম।
সূত্র: চ্যানেল নিউজ এশিয়া
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন