রাশিয়া-বেলারুশের ব্যাংক লেনদেন বন্ধ, প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে

ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও বেলারুশের বেশ কিছু ব্যাংকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। এসব ব্যাংককে সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিনান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন, সুইফট থেকে বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দেওয়া হয়। আজ শনিবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে যাচ্ছে। এর ফলে এই দুই দেশের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো আর সরাসরি লেনদেন করতে পারবে না।

রাশিয়ার ১২টি ও বেলারুশের ২টি ব্যাংকের মধ্যে ১টি ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অর্থ লেনদেন হতো। ব্যাংক ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ফরেন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স (ভিইবি) নামে রাশিয়ার ওই ব্যাংক কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে সুইফট ব্যবস্থার মাধ্যমে পাঠানো একটি বার্তায় আপাতত তাদের সঙ্গে লেনদেন করতে নিষেধ করেছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা অন্যান্য ব্যাংকের কাছ থেকেও বাংলাদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে এমন বার্তা এসেছে।

তবে এতে দেশের অর্থনীতিতে বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, বাংলাদেশ রাশিয়ায় যে পণ্য রপ্তানি করে, তার প্রায় ৮০ ভাগের আর্থিক লেনদেন হয় সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের ব্যাংকের মাধ্যমে। তবে সরকারি প্রকল্পের হাল কী হবে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে।

রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় রূপপুর প্রকল্পের বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা। এই প্রকল্পে ৯১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে রাশিয়া।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ প্রকল্পটি নতুন। গত মাসে দেশের দ্বিতীয় কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণে রুশ প্রতিষ্ঠান গ্লাভ কসমসের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত মহাকাশ সংস্থা রসকসমসের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান গ্লাভ কসমস।

রূপপুর প্রকল্পে অর্থায়নের রুশ এজেন্ট ভিইবির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক লেনদেন করে থাকে। কয়েকদিন আগে সুইফটের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংককে বার্তা পাঠিয়ে আপাতত লেনদেন না করার কথা জানায় ব্যাংকটি। পরবর্তীতে বিলম্ব ফি দিতে হবে না বলেও জানানো হয়।

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় থাকা রাশিয়ার অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গেও লেনদেন না করার বিষয়ে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে সংশ্লিরা জানিয়েছেন। ৯১ হাজার কোটি টাকা রুশ ঋণের এই প্রকল্প থেকে ২০২৪ সালে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

গত শুক্রবার নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যাংকগুলোর সঙ্গে লেনদেন না করার নির্দেশ দিয়ে দেশের সকল ব্যাংকে বার্তা পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই তালিকায় রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক ভিটিবি ব্যাংক, ব্যাংক অতক্রিতিয়ে, নোভিকম ব্যাংক, প্রমসিয়াজ ব্যাংক, ব্যাংক রোশিয়া, সভকম ব্যাংক ও ভেনশেকনম ব্যাংক বা ভিইবি রয়েছে।