দল ছাড়ার ঘোষণা দিলেন সিনেটর কার্স্টেন : কংগ্রেসে সংকটে ডেমোক্র্যাটরা

৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজের কর্তৃত্ব হারানোর পর উচ্চকক্ষ সিনেট হাতে থাকায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছিল ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টি। জর্জিয়ার রান-অফ নির্বাচনে সিনেটর র‍্যাফায়েল ওয়ারনক জিতে গেলে ডেমোক্র্যাটরা আরো কিছুটা শক্তি সঞ্চার করে।

কিন্তু এখন নতুন করে সংকটে পড়েছে মর্টগেজের সিনিয়র লোন অফিসার ফাহিম হোসেন। তিনি বলেন, এখন মর্টগেজ রেট কিছুটা কমতে শুরু করেছে। মাঝখানে ৭.৫ থেকে ৭.৬ পর্যন্ত উঠেছিল। এখন চতুর্থ কোয়ার্টারে এটি আছে ৬.৫, ৬.৬ শতাংশ পর্যন্ত। এটি ফুল ডকের জন্য। আর নো ডকের জন্য ইন্টারেস্ট রেট আরো বেশি। ২০২৩ সালে মর্টগেজ রেট আরো বাড়তে পারে, যা কিনা ৮ শতাংশ হতে পারে। এখন চলছে ছুটির মৌসুম। এ কারণে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে লেনদেন কম হবে। তাই এই কোয়ার্টারের বাকি অংশে ইন্টারেস্ট রেট বাড়বে না। এটি ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত একই থাকতে পারে। এরপর আবার বাড়তে পারে। তবে আশার কথা হচ্ছে, আগামী বছরের তৃতীয় ও চতুর্থ কোয়ার্টারে গিয়ে রেট কমা শুরু করতে পারে। ফাহিম জানান, বাড়ির দাম এখনো আশানুরূপ কমছে না। দাম কমা-বাড়া নির্ভর করে বাড়ির মালিক ও চলমান মার্কেটের ওপর। বর্তমানে অনেক বাড়ির মালিক মার্কেটে বাড়ি দিচ্ছেন না। তাই নতুন বাড়ি আসছে কম। এখন বায়ার মার্কেট সেলার মার্কেট নয়। আগে মার্কেটে একটি বাড়ি এলে ক্রেতা থাকতেন ২০-২৫ জন। দাম যা চাওয়া হতো, তার চেয়ে বেশি দামে বাড়ি বিক্রি হতো। এখন সেই পরিস্থিতি নেই। এখন বাড়ির ক্রেতা কম। এ কারণে কোনো বাড়ির জন্য দু-তিনজনের বেশি ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে যাদের হাতে অর্থ রয়েছে, ডাউন পেমেন্ট রয়েছে, তারা বাড়ি কিনতে পারেন। বাড়ি কিনলে সেলারের সঙ্গে দরদাম করতে পারবেন। সেলার কমিশন নিতে পারে। ক্লোজিং কস্টও কনসেশন নিতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন সুবিধা নিতে পারে।
তিনি বলেন, যারা বাড়ি কিনতে চান, তারা এখনই কিনে ফেলতে পারেন।

কারণ এখন বাড়ি কিনলে পরে যখন লোনের ইন্টারেস্ট কমবে, তখন রিফাইন্যান্স করা যাবে। ইন্টারেস্ট কমলে রিফাইন্যান্স করলে সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে নো ডকওয়ালারা রিফাইন্যান্সের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাবেন না। কারণ রিফাইন্যান্স করার জন্য ফুল ডক, ডব্লিউ-২ সহ সব প্রয়োজনীয় কাগজ লাগবে। যারা বাসা বা কন্ডো, কো-অপ্ট কিনবেন, এগুলোর দাম তেমন ওঠানামা করে না। তাই এখন সিঙ্গেল ফ্যামিলি, মাল্টি ফ্যামিলি হলে বাড়ি কিনতে পারেন।
ফাহিম হোসেন আরো বলেন, নিউইয়র্ক সিটিতে যারা বাস করেন, তাদেরকে এখানেই বাড়ি বা বাসা কেনার অপশন খোঁজা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে।

যদিও এখন অনেকেই সিটি ছেড়ে বিভিন্ন স্টেট ও নিউইয়র্কের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন। কিন্তু সেসব এলাকায় সিটির মতো সুযোগ থাকবে না। সিটিতে চাইলেই হাতের কাছে বাজার, মসজিদ, ফার্মেসি, গ্রোসারিসহ সব আছে। হালাল মাংসের দোকান আছে। সিটির বাইরে চাইলেই সবকিছু পাওয়া যায় না। যেখানে বাংলাদেশি ও মুসলিম কান্ট্রির মানুষেরা রয়েছেন, সেখানে কিছু কিছু হালাল গ্রোসারি আছে। মসজিদ রয়েছে। অনেক এলাকা আছে, যেখানে হালাল মাংসের জন্য এক ঘণ্টার বেশি পথ যেতে হতে পারে। এ ছাড়া সিটিতে থাকার সুবিধা হলো চাইলেই সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়া যায়। অন্য স্টেট কিংবা সিটির বাইরে হলে সেটি সম্ভব হবে না।

ফাহিম বলেন, এখন যার বছরে ইনকাম ৮০ হাজার ডলার, কোনো লোন না থাকলে তিনি আগে চার লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ ডলার লোন পেতেন। এখন তিনি পাবেন তিন লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখ ডলার। এখন ইনকাম একই থাকলেও ইন্টারেস্ট বাড়ায় লোনের পরিমাণ কমেছে। ফলে কোনো ক্রেতা যদি সাড়ে ছয় লাখ থেকে সাত লাখ ডলারের বাড়ি কিনতে চান তার ইনকাম হতে হবে এক লাখ ডলার। ফলে অনেকেই বাড়ি কেনার যোগ্য হচ্ছেন না। যদি কেউ বাফেলোতে আড়াই লাখ ডলারের বাড়ি কিনতে চান, তাকে ডাউন পেমেন্ট দিতে হবে ২০-২৫ শতাংশ। আর লোনের জন্য তার ইনকাম হতে হবে ৩০-৩৫ হাজার ডলার। এ ক্ষেত্রে যারা সিটির বাইরে গিয়ে বাড়ি কিনবেন, তাদেরকে দেখাতে হবে তিনি সিটি থেকে মুভ করলেও তার চাকরি বদল করা সম্ভব, তিনি বদলি হয়ে এসেছেন তার সুবিধার জন্য।

যারা অ্যাপসভিত্তিক গাড়ি চালান, তাদের জন্য সুবিধা। যারা সেলফ এমপ্লয়েড, তাদের জন্যও সুবিধা। যিনি চাকরি ছেড়ে ওখানে গিয়ে বাড়ি কিনতে চাইবেন, তার ইনকাম বা চাকরি না থাকলে বাড়ি কেনা তুলনামূলক কঠিন হবে, লোন পাওয়ার ক্ষেত্রে। এ জন্য অনেক ভেবেচিন্তেই পরিকল্পনা করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা সাধারণত এক মাসের মধ্যে লোন দিয়ে থাকি। বাড়ির ক্ষেত্রে লোন দ্রুত হয়। কেনাও দ্রুত।
ফাহিম বলেন, ২০২৩ সালের শেষ দিকে অথবা ২০২৪ সালে লোনের ইন্টারেস্ট কমতে পারে।

তখন এটি ৫.৮-এ নামতে পারে। যদিও কেউ কেউ বলছেন, তা আরো কমতে পারে। ৪ শতাংশেও আসতে পারে। তবে এটি এখনই বলা যাচ্ছে না। অপেক্ষা করতে হবে। ফুল ডকের বাড়ি কিনতে চাইলে দুই বছরের ট্যাক্স ফাইল, শেষ এক মাসের পে-স্টাব, দুই বছরের রেসিডেন্সিসহ বিভিন্ন নথিপত্র লাগবে।