কুড়িগ্রামে সড়ক সংস্কার কাজের স্টিমেট চাওয়ায় সাংবাদিকের উপর চটলেন প্রকৌশলী

সড়ক সংস্কার কাজের প্রাক্কলন (স্টিমেট) চাওয়ায় সাংবাদিকের উপর চটলেন কুড়িগ্রাম সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম। সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরণের ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় এতে নিন্দা জানিয়েছেন ইউনাইটেড প্রেসক্লাব, কুড়িগ্রাম সাংবাদিক সংসদ এবং বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদ ও কুড়িগ্রাম দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।

১০ এপ্রিল (সোমবার) দুপুরে দৈনিক বাংলাদেশের খবরের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি রাশিদুল ইসলাম রাশেদ এবং দৈনিক মানবকন্ঠের প্রতিনিধি মনোয়ার হোসেন লিটন উলিপুর- চিলমারী সড়ক সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে উক্ত কাজের নিয়োজিত কর্মকর্তা কুড়িগ্রাম সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোতাহার আলীর নিকট প্রাক্কলন (স্টিমেট) চাইতে গেলে তিনি তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন-“আপনাদের প্রাক্কলন (স্টিমেট) চাওয়ার এখতিয়ার নাই” একান্তই যদি তথ্য পেতে চান তাহলে এক্সিয়েন মহোদয়ের কাছে যান”। পরে তিনি তথ্য দিতে অসহযোগিতা করায় নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট গেলে তিনিও এই দুই প্রতিবেদককে বলেন-“স্টিমেট চাওয়ার অধিকার আপনাদের নাই, এমনকি তথ্য অধিকার আইনেও প্রাক্কলন (স্টিমেট) দেয়ার সুযোগ নাই, এছাড়া আপনাদের অন্য কোন তথ্যের প্রয়োজন হলে তথ্য আইনে আবেদন করেন তথ্য দেয়া হবে”। তার এমন সিদ্ধান্তে সাংবাদিকরা তথ্য অধিকার আইনে তথ্য পেতে আগ্রহী হয়ে ওই অফিস থেকে বের হওয়ার প্রাক্কালে নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম উত্তেজিত হয়ে এই দুই প্রতিবেদকের সামনে তিনি তাঁর অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডেকে বলেন-” আজকের পর থেকে এই অফিসে যেন কোন সাংবাদিক ঢুকতে না পারেন”। একথা বলে তিনি সাংবাদিকদের বিদায় দেন।

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের উলিপুর-চিলমারী সড়কের ৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকার সংস্কার কাজটি ঢাকাস্থ মেসার্স আবেদ-মনছুর নামীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে তড়িঘড়ি করে কাজ সম্পাদন করে যাচ্ছেন। প্রকল্প এলাকায় সিটিজেন চার্টার না থাকা, সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তার অনুপস্থিতির সুযোগে নিয়োজিত ঠিকারী প্রতিষ্ঠান ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করতেছেন-এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই দুই প্রতিবেদক সরেজমিনে পরিদর্শন করে কাজে অনিয়মের সত্যতার প্রেক্ষিতে তথ্য নিতে যান কুড়িগ্রাম সড়ক বিভাগে।

এব্যাপারে কুড়িগ্রাম সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সামিউল হক নান্টু বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জনগণকে জানানোর জন্য প্রকল্প এলাকায় অবশ্যই সিটিজেন চার্টার থাকতে হবে। এছাড়া শুধু সাংবাদিক নয়, একজন সাধারণ নাগরিকও তথ্য পাওয়ার অধিকার রাখে। আমরা সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতির নিরসন করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আর তথ্য না দেয়া সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম অন্তরায়।

কুড়িগ্রাম জেলা তথ্য কর্মকর্তা শাহজাহান আলী বলেন, তথ্য অধিকার আইনের ৭ এর (ক)-(ন) ধারা পর্যন্ত কতিপয় তথ্য ছাড়া সকল তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দিতে বাধ্য।

এব্যাপারে কুড়িগ্রাম-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ এম,এ মতিন বলেন-কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য বর্তমান সরকার পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিয়েছে। উলিপুরের মানুষকে ভাঙা সড়কের কারণে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই সড়কের সংস্কার কাজ চলছে। সংস্কার কাজে অনিয়ম কোনভাবেই মেনে হবে না।